দেশজুড়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে গোপালগঞ্জের নয়-দশ বছরের শিশু জুনায়েদ হোসেন মোল্লা। নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে বিমানে চড়ায় এখন রীতিমতো ভাইরাল সে। শিশুটির একের পর এক সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মী ও ইউটিউবাররা। শুধু বিমানে চড়া নয়, এবার পাইলট হতে চায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়াই বিমানে উঠে পড়া আলোচিত সেই শিশুটি।
কেউ মুঠোফোনে, কেউবা বাড়িতে এসে জুনায়েদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিমানে চরানোর লোভনীয় প্রস্তাব দিচ্ছেন। আর জুনায়েদকে একনজর দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় লেগেই আছে। আগ্রহ নিয়ে তার মুখ থেকে বিমানে ওঠার দুঃসাহসিক ঘটনা শুনছেন তাঁরা।
আজ শুক্রবার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরে সাঁতার কাটাসহ নানা দুরন্তপনায় কাটছে শিশুটির সময়। এরপর পরিপাটি হয়ে সে হাজির গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে। এবার সে জানাল শুধু বিমানে চড়ার শখ নয়, বড় হয়ে হতে চায় একজন পাইলট।
জুনায়েদ বলে, অনেকেই বলতেছে যে আমি আর আমার পরিবারের লোকজন নিয়ে বিমানে ঘুরবে। আমার খুবই ভালো লাগতেছে। আর কখনো এ রকম দুরন্তপানা করব না। ভালো পড়াশুনা কইরে আমি পাইলট হব।
জুনায়েদের বাবা ইমরান মোল্লা বলেন, ‘আমার ছেলেকে অনেকে অনেক ধরনের অফার দিচ্ছে তার শখ পূরণ করার জন্য। তাকে বিমানে ঘুরাবে। আমি গরিব সবজি ব্যবসায়ী। আমার পক্ষে তাকে ভালো করে পড়ালেখার ব্যবস্থা করার সামর্থ্য নেই। বিত্ত সমাজের কাছে আমি এই অনুরোধ জানাব সাময়িক খুশির ব্যবস্থা না করে তার জীবন যেন ভালো হয় এবং লেখাপড়া করে তার যোগ্যতা অনুযায়ী চলতে পারে সে জন্য সাহায্য করা। যদি কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ায় তাহলে আমার ছেলেকে মানুষ করার জন্য হাত বাড়াক।’
জুনায়েদের ছোট চাচা ইউসুফ মোল্লা বলেন, ‘জুনায়েদের এই ঘটনা দেশ-বিদেশ থেকে অনেকে দেখেছে। আমাকে অনেকে ফোন করেছে, জুনায়েদকে নিয়ে বিমানে ঘুরতে চেয়েছে। বিমানে উঠলেও তো সে উড়তে পারেনি। তাকে বিমানে উড়াতে চায়। আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি নাই এখনো কী করব।’
প্রতিবেশী এনায়েত হোসেন বলেন, ‘আসলে জুনায়েদ প্লেনে উঠছেল কিন্তু উড়তে পারে নাই। ওর মনের একটা আশা রয়ে গেছে। অনেকে ওরে ঘুরাইতে চাইছে প্লেনে। যদি ঘুরায় তাহলে ওর মনের আশা পূরণ হবে ও খুশি হবে এতে আমরাও খুশি হব।’
গত ১২ সেপ্টেম্বর পাসপোর্ট কিংবা বোর্ডিং পাস ছাড়াই নয়টি নিরাপত্তা স্তর ফাঁকি দিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে প্রায় আধা ঘণ্টা বসে থাকে জুনায়েদ। কেবিন ক্রু তাকে সিটে বসতে দিলেও পরে তার কাছে ভিসা-পাসপোর্ট পাওয়া না গেলে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি তাকে বিমান থেকে নামিয়ে পুলিশের জিম্মায় দেয়।