‘দুই চোখে শুধুই অন্ধকার দেখছি। স্বামীর রেখে যাওয়া বসতভিটা ছাড়া তেমন কিছুই নেই। স্বামীর রোজগারে চলত আমার ক্যানসারের চিকিৎসা আর দুই সন্তানের পড়াশোনা। ওরা পরিকল্পিতভাবে সংসারের আলো নিভিয়ে দিল।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলেন গাজীপুরের টঙ্গীতে সন্ত্রাসীদের হাতে হত্যার শিকার শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম আফ্রাদের স্ত্রী কাজলী আক্তার।
নিহত শহিদুল ইসলাম আফ্রাদ (৪৫) গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের মিটালু গ্রামের মৃত আজমত আলী আফ্রাদের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি।
নিহত শ্রমিকনেতার স্ত্রী কাজলী আক্তার বলেন, ‘গত ২৬ জুন রাত ৮টার দিকে মোবাইল ফোনে স্বামীর সঙ্গে সবশেষে কথা হয়। ওই সময় আমার স্বামী মোবাইল ফোনে জানান আমি একটু সমস্যায় রয়েছি। তুমি অপু আর ইব্রাহিমকে নিয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে শুয়ে পড়। আমার আসতে একটু দেরি হবে। এর এক ঘণ্টা পরে আমার স্বামী নেই বলে ফোনে জানায়। এই ফোন কলের সঙ্গে সঙ্গে আমার সংসারের আলো নিভে যায়।’
স্বামীর রোজগার দিয়ে কাজলী নিজের চিকিৎসা ও দুই ছেলে সাদিকুল ইসলাম অপু আর ইব্রাহিম খলিলের পড়াশোনাসহ সব ধরনের সাংসারিক খরচ চলত বলে জানান কাজলী আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর সহায়সম্বল বলতে বসতভিটা। এ ছাড়া কোনো ধরনের সহায়সম্বল নেই। আমার স্বামীকে ওঁরা পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। আমার স্বামীর বেতন ওঠানোর আগেই ওঁরা তাঁকে হত্যা করে।’
এদিকে নিহত শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলামের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর গ্রামের বাড়িতে যান গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ। এ সময় ক্যানসার-আক্রান্ত নিহত শহিদুল ইসলামের স্ত্রীকে আর্থিক সহায়তা দেন তিনি। শ্রমিকনেতার দুই সন্তানের পড়াশোনার দায়িত্ব নেন সংসদ সদস্য।
গত ২৬ জুন সোমবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড কারখানার সামনে সন্ত্রাসীদের হাতে হত্যার শিকার হন শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম।