জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রথম ধাপের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের আগে শেষ করার আশা ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী থেকে নিযুক্ত প্রকল্প পরিচালক (পিডি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইফতেখার আলম।
আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) উপাচার্যের সভাকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে এক সভায় তিনি এসব কথা জানান।
প্রকল্প পরিচালক ইফতেখার আলম বলেন, ‘আমাদেরকে বলা হয়েছে, প্রথম ধাপের কাজ ২০২৬-এর ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে। আমরা এর আগেই শেষ করে ফেলতে পারি। এর ভেতরেই দ্বিতীয় ধাপের কাজও পরিকল্পনার মধ্যে থাকবে। তবে দ্বিতীয় ধাপের দৃশ্যমান কাজগুলো ২০২৬-এর পরই শুরু করা যাবে। এখানে মন্ত্রণালয়ের অর্থছাড়ের একটি বিষয় রয়েছে।’
বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হলের বিষয়ে সেনাবাহিনীর এই প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘স্টিলের স্ট্রাকচার থেকে কংক্রিটের করাটাই এখানে সাসটেইনেবল হবে বলে আমার মনে হয়। তা ছাড়া, স্টিল স্ট্রাকচারে সময়ও বেশি লাগে। স্থানীয় কমিউনিটির পক্ষ থেকেও কিছু কথা, আপত্তি এসেছে। এগুলো বসে সমাধান করে নিতে হবে। এদিকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসেও কিছু করতে পারি কি না, এটাও চিন্তার মধ্যে রয়েছে।’
এ সময় লোকাল কমিউনিটির সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের প্রস্তাব রাখেন জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল। তিনি বলেন, ‘আমরা ছাত্রপ্রতিনিধিরা সবাই একত্র হয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করতে পারি। আমরা আশা রাখি, তাঁদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা বুঝবেন এবং আমরা তাঁদের বোঝাতে সক্ষম হব।’
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘পুরান ঢাকায় ছাত্রদের জন্যও হলের প্রয়োজন রয়েছে। বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হলে স্টিল স্ট্রাকচার না করে যদি আমরা কংক্রিট করি তাহলে এটাই বেটার হবে। যেহেতু এই ক্যাম্পাস আমাদেরই থাকবে সুতরাং আমাদের স্থায়ী হলও প্রয়োজন।’
শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সামসুল আরেফিন বলেন, ‘বর্তমান মূল ক্যাম্পাসকে কেন্দ্র করে আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম গড়ে তুলতে হবে।’
জবি সংস্কার আন্দোলনের সদস্য নওশিন নাওয়ার জয়া বলেন, ‘আমাদের ছাত্রীদের জন্য একটা হল আছে। সুতরাং এখানে ছেলেদের হলটা বেশি প্রয়োজন।’
শিক্ষার্থীদের এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা এডিসি পারভেজ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, আইনগত কাঠামোর মধ্যে কীভাবে ফ্যাসিলিটেট করা যায়। আইনগতভাবে অস্থায়ী বা স্থায়ী কাঠামো করার সুযোগ নাই। স্ট্রাকচারের বিষয়টা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে। লোকাল কমিউনিটিকে রেসপেক্ট না করলে সাসটেইনেবল হয় না।’
সার্বিক অবস্থা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘আমরা সবকিছু প্রকাশ্যে করতে চাই। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বললে সমাধান হবে বলে আশা করি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্বতন্ত্র আছে। এটা আমাদের মূল ক্যাম্পাস আর কেরানীগঞ্জ আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হবে।’
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘২০২৬-এর ডিসেম্বরের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের কাজের পরিকল্পনা হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে একটি ছাত্র হল প্রথম ধাপের কাজে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যদি বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমানের এখানে স্ট্রাকচার তৈরিতে দেরি হয়, সে ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব ৭ একর জমিতে বালু ভরাট করে অস্থায়ীভাবে ছাত্রদের রাখার ব্যবস্থা করারও চিন্তাভাবনায় রাখা উচিত।’
এ সময় আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. সাবিনা শরমিন, শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন, নাসির আহমেদ, প্রক্টর, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাসহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।