ঢাকার সাভারে শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তার গৃহকর্ত্রী মাহমুদা খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের পুলিশ রিমান্ড এবং তাঁর স্বামী চিকিৎসক কাজী ইসমাইল হোসেনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার চিকিৎসক দম্পতিকে সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হাসান সিকদার এই তথ্য জানান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রায় এক বছর আগে মীমের দরিদ্র বাবা-মা তাকে চিকিৎসক দম্পতির বাসায় কাজ করতে দেন। সামান্য ভুলত্রুটি হলেই তাঁরা মীমের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাতেন। কয়েক দিন আগে দুই হাজার টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে চিকিৎসক দম্পতি মীমকে ছুরি দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতন করেন। তার মাথা ও পায়ে ব্যাটের আঘাত করা হয়।’
হাসান শিকদার বলেন, অমানবিক নির্যাতনের কারণে মীম অসুস্থ হয়ে পড়লে গত শুক্রবার তাকে মা-বাবার হেফাজতে দেওয়া হয়। এর পরপরই মীমকে নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এ ব্যাপারে শিশুটির মা থানায় মামলা করলে ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ রোববার সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে তাঁদের ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত মাহমুদা খাতুনকে এক দিনের পুলিশ রিমান্ডে দিলেও তাঁর স্বামী চিকিৎসক কাজী ইসমাইল হোসেনকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন।
এর আগে গতকাল শনিবার সাভার পৌর এলাকার রাজাশনের বাসা থেকে কাজী ইসমাইল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মাহমুদা খাতুনকে আটক করে পুলিশ। গতকালই তাঁদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী মীমের (১০) মা কুলসুম বেগম সাভার থানায় শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।
কাজী ইসমাইল হোসেনের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ঘরিয়ালা কাজীপাড়া গ্রামে। তিনি বরগুনা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক। সাভার পৌর এলাকার রাজাশনে তাঁদের বাসা রয়েছে। তাঁরা বরগুনা ও রাজাশন দুই বাসাতেই থাকতেন। মীম তাঁদের রাজাশনের প্রতিবেশীর মেয়ে।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা বলেন, ‘মীমের শরীরে এমন কোনো জায়গা নেই যে, তাকে ধারালো অথবা ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়নি, যা খুবই অমানবিক। তাকে হাসপাতাল থেকে সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।’