ফকির লালন সাঁইয়ের ২৫০তম জন্মবর্ষ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী লালন উৎসব শেষ হয়েছে। জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এই উৎসবের প্রতিপাদ্য করা হয় লালন সাঁইয়ের বাণী ‘এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে, যেদিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান জাতি গোত্র নাহি রবে’।
গতকাল শুক্রবার উৎসবের উদ্বোধন করেন লালন অনুসারী বাউল ফকির পিয়ার সাঁই। আজ শনিবার সন্ধ্যায় লালনের গান পরিবেশন করেন কুষ্টিয়ার ফকির পিয়ার সাঁই, শিরিন সুলতানা, ফারুক মণ্ডল, এ্যানি খান, ফরিদপুরের শিল্পী ফকির পাগলা বাবলু, ফকির শাহজালাল প্রমুখ।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে উৎসবের ঘোষণা পাঠ করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি। ঘোষণায় তিনি বলেন, ৫ আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আকাঙ্ক্ষা সব বৈষম্যের অবসান হলেও বাস্তবতা ভিন্ন তৈরি হয়েছে। ধর্ম, মত ও পথের বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। নারায়ণগঞ্জের কাশীপুরের মধ্য নরসিংপুরে ১০ বছর ধরে আয়োজন করে আসা লালন মেলা ও সাধু সঙ্গের আয়োজন এবার করতে দেওয়া হয়নি।
রফিউর রাব্বি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে অর্ধশতাধিক মাজার-খানকায় হামলা ও ভাঙচুর করা হলেও এর বিরুদ্ধে সরকারের নির্লজ্জ নীরবতা আমাদের আহত করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
রফিউর রাব্বি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের লালন উৎসব ধর্ম রক্ষার নামে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর ভিন্নমত দমনে সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং সরকারের নীরবতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, মানবমুক্তির মহা-কর্মযজ্ঞে যুক্ত থেকে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি রক্ষার লড়াই আমরা অব্যাহত রাখব।’