নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
যৌনকর্মীরা মানুষ, তাঁরাও দেশের নাগরিক। সব ধরনের নাগরিক অধিকার তাঁদের প্রাপ্য। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আদাবরে ‘যৌনকর্মীদের নিয়ে সংবেদনশীল প্রতিবেদনের নির্দেশিকা তৈরি’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালার শেষ দিনে আলোচকেরা এসব কথা বলেন।
মানবাধিকার সংগঠন নারীপক্ষ এই কর্মশালার আয়োজন করে। বক্তারা যৌনকর্মীদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
কর্মশালায় নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মাহবুবা মাহমুদ লীনা বলেন, ‘নারীকে আমরা দুটো দিক থেকে দেখি। হয় নারী দেবী, নাহয় নারী পতিতা। মাঝখানে যে নারীর অবস্থান থাকতে পারে, নারী যে মানুষ, এটা কেউ ভাবতে চায় না।’
কর্মশালায় গণমাধ্যমকর্মী, দেশের ১৫টি জেলা থেকে আসা যৌনকর্মী এবং মানবাধিকারকর্মীরা অংশ নেন।
আলোচকেরা বলেন, যৌনকর্মীর ওপর ক্ষোভের একটা বড় কারণ তাঁরা নিজেরা আয় করেন এবং নিজেরা নিজেদের জীবন পরিচালনা করেন। যাঁরা যৌনকর্ম পেশায় আসেন, তাঁরা বাধ্য হয়ে আসেন। কেউ প্রতারিত হয়ে আসেন। তাঁদের অন্য কাজের দক্ষতা তৈরি করা গেলে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দেবেন।
নারীপক্ষের প্রান্তিক নারীর অধিকার আন্দোলন শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী জাহানারা খাতুন বলেন, ‘যৌনকর্মীদের মানুষ হিসেবে সম্মান দিতে হবে। কেউ যদি এই পেশায় আসতে চান, আমরা তাঁকে অসম্মান করব না। আবার কেউ যদি এই পেশা থেকে বের হতে চান, তাঁকেও আমরা তিরস্কার করব না।’
কর্মশালায় অংশ নেওয়া যৌনকর্মীরা জানান, তাঁরা এবং তাঁদের সন্তানেরা শিক্ষা, চিকিৎসাসহ যেকোনো ক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার হন। নিজেদের প্রতিষ্ঠিত মসজিদ ও স্কুল থেকেও তাঁদের সন্তানদের বের করে দেওয়া হয়।
যৌনকর্মীরা জানান, সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনের সময় থেকে তাঁরা রাস্তায় প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হচ্ছেন। এ জন্য তাঁরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
কর্মশালায় যৌনকর্মীদের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবেদনশীল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।