আল-আমিন রাজু, ঢাকা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিসাব বিভাগে দীর্ঘদিন চাকরি শেষে ২০১০ সালে অবসরে যান মো. নজরুল ইসলাম। ২০২০ সালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মারা যাওয়ার দুই বছর পরেও তার নাম আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তৃতীয় শ্রেণি কল্যাণ সমিতির নির্বাচনের ভোটার তালিকায়। আগামীকাল ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে সমিতির নতুন ভোটার তালিকায় আছেন মৃত ও প্রেষণে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীরাও। গঠনতন্ত্র সংশোধন করে অবসরে যাওয়া কর্মচারীদেরও যোগ করা হয়েছে ভোটার হিসেবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জরুরি বিভাগের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকার কাছে অভিযোগ করেন, বিদায়ী কমিটি পাঁচ হাজার করে টাকা নিয়ে নিয়মের বাইরে গিয়ে সবাইকে সদস্যপদ দিয়েছেন।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর অনুমোদিত ভোটার তালিকায় দেখা যায়, দীর্ঘদিন আগে অবসরে গেছেন এমন ৭১ জন সাবেক কর্মচারীকে সমিতির সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে অন্তত ৫ জন বেঁচে নেই। পাশাপাশি অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্রেষণে নিয়োগ পাওয়া বিশজনের বেশি কর্মচারীকেও সমিতির সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে।
এই সদস্য পদ প্রদান বৈধ করতে বিদায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রব ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান সমিতির গঠনতন্ত্রের ধারা পরিবর্তন করেছে। নতুন এই ধারায় বলা হয়েছে, অবসর ও প্রেষণে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীরা সদস্য হয়ে ভোট দিতে পারবেন কিন্তু প্রার্থী হতে পারবেন না।
অবসরপ্রাপ্ত ও প্রেষণে আসা কর্মীদের টাকার বিনিময়ে ভোটার তালিকায় স্থান দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন বর্তমান সভাপতি এসএম আব্দুর রব বলেন, সিদ্ধান্ত আমার একার না। সাধারণ সভায় সকলের মতামতের ভিত্তিতে এই তালিকা করা হয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মৃত কর্মচারীদের নাম ভোটার তালিকায় থাকা প্রিন্টের ভুল বলে দাবি করেন রব।
আজ বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) এলাকা ঘুরে দেখা যায় নির্বাচনে তিনটি প্যানেল অংশ গ্রহণ করছে। প্রতিটি প্যানেলের প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি ব্যানার ও ফেস্টুন টানিয়েছেন। অবসরপ্রাপ্তদের ভোটার তালিকায় স্থান দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও ভোটার হারানোর ভয়ে প্রার্থীরা এ বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন না।
এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে নির্বাচন কমিশনার ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অর্থ) ডা. মো. আশরাফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমান কমিটি তাদের সভায় পাশ করে তারপর নির্বাচন কমিশনের কাছে দিয়েছে।’ রুটিন দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের মধ্যেও নেই।’