মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ইউনিপেটুইউর গ্রাহকদের ৪২০ কোটি টাকা নিয়ে দুদকের করা আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই রায় দেন। ব্র্যাক ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখায় ওই টাকা জমা রয়েছে।
দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করেছেন এবং আমাদের আপিল নির্দেশনাসহ নিষ্পত্তি করেছেন। পূর্ণাঙ্গ রায় না পেলে এর চেয়ে বেশি বলা যাবে না।’
পাঁচজন গ্রাহকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগ নির্দেশ দিয়েছেন ব্র্যাক ব্যাংকে থাকা ৪২০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে স্থানান্তর করতে। স্থানান্তরের পর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে বলা হয়েছে। এরপর ইউনিপেটুইউর গ্রাহকেরা আবেদন করলে যাচাই বাছাই করে তাঁদের পাওনা টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।’
জানা যায়, গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি ইউনিপেটুইউর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। পরের বছর বিনিয়োগ করা ৬৫ কোটি টাকা ফেরত পেতে ঢাকার আদালতে মামলা করেন মিজানুর রহমানসহ ৫ গ্রাহক। ওই মামলায় আদালত ২০১৪ সালে ডিক্রি দেন। এরপর টাকা বুঝে পেতে এক্সিকিউশন মামলা করেন তারা। তবে ব্র্যাক ব্যাংক আদালতে বলে দুদক থেকে ব্যাংক হিসাব জব্দ করা আছে, তাই টাকা দেওয়া সম্ভব না। পরবর্তীতে আদালতও বলেন, টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
এদিকে বিচারিক আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন ৫ গ্রাহক। হাইকোর্ট ২০১৬ সালে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করে। যা মঙ্গলবার নিষ্পত্তি করে দেন আদালত।
ব্যারিস্টার অনীক আর হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুদকের মামলায় ইউনিপেটুইউর ৪২০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করে রায় দিয়েছিলেন আদালত। রায় অনুযায়ী ওই টাকা সরকারি কোষাগারে থাকার কথা। দুদকের উচিৎ ছিল ওই টাকা সরকারি কোষাগারে নিয়ে গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া। কিন্তু টাকা এখনো ব্র্যাক ব্যাংকেই রয়ে গেছে। আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী এখন গ্রাহকেরা প্রমাণ স্বাপেক্ষে তাদের টাকা ফেরত পাবে।’