রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে একটি বদ্ধ ঘরের মেঝে থেকে এক শিশুসহ দুজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ‘ছারপোকা মারার কীটনাশকের বিষক্রিয়ায়’ তাঁদের মৃত্যু বলে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। দুজনই ভ্যানিটি ব্যাগ তৈরির কারখানার শ্রমিক।
গতকাল শনিবার বেলা ২টার দিকে কামরাঙ্গীরচর কয়লাঘাট (করিমাবাদ) সাধন ভিলার নিচতলায় অবস্থিত কারখানা থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার দুর্গাপুর গ্রামের অলিউল্লাহর ছেলে আবু বকর সিদ্দিক নাঈম (২১) এবং একই গ্রামের মো. আলাউদ্দিনের ছেলে মোহন (১২)।
কামরাঙ্গীরচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মুছা সুরতহাল প্রতিবেদনে লিখেছেন, ‘ওই বাসা থেকে ছারপোকা মারার কীটনাশক, এর খালি প্যাকেট এবং আংশিক খাওয়া রুটি উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
ওই কারখানার মালিক ইউনুসের ছোট ভাই মোহাম্মদ ইয়াকুব ও মৃত নাঈমের মামা বেলায়েত হোসেন জানান, কারখানাটিতে নাঈম পাঁচ বছর ও মোহন এক বছর ধরে কাজ করতেন এবং সেখানেই থাকতেন। ছারপোকার উপদ্রবের কারণে মাঝেমধ্যেই কারখানার ভেতরে কীটনাশক প্রয়োগ করত। কয়েক দিন আগে কারখানার মালিকই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট এনে রাখেন। সেগুলো তাঁদের রুমে প্রয়োগ করতে বলে তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যান।
গত শুক্রবার দিনের বেলায় কারখানার কাজ বন্ধ ছিল। তখন তাঁরা দিনের বেলায় দরজা-জানালা বন্ধ করে কীটনাশক মেঝেতে ছিটিয়ে রাখেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা দুজন রুমে ঢোকেন। রুটি-কলা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তবে বিষক্রিয়ার বিষয়টি তাঁরা হয়তো বুঝতে পারেননি। গতকাল শনিবার সকালে মালিকের ছোট ভাই কারখানা খোলার জন্য তাঁদের ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে চলে যান। এরপর জোহরের নামাজ পড়ে আবার গিয়ে তাঁদের ডাকাডাকি করেন। তখনো কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন, ফ্লোরে বিছানায় দুজনই মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। পরে তাঁরা থানায় খবর দেয়।