নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিনের দায়ের করা মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আকতার হোসেনসহ ২৪ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অন্য যাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন, মো. সাদ্দাম হোসেন, মো. তসলিম হোসাইন অভি, আব্দুল কাদের, মো. তরিকুল ইসলাম, মামুনুর রশিদ, নাজমুল হাসান, রাকিব, আরিফুল ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, এইচএম রুবেল হোসেন, ইউসুফ হোসেন, মিজান উদ্দিন, বেলাল হোসেন, ওমর ফারুক জিহাদ, আবু কাউছার, জাহিদ আহসান, মোয়াজ্জেম হোসেন রনি, মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, শাহ ওয়ালিউল্লাহ, মো. রাকিব, সাজ্জাদ হোসেন পারভেজ।
আজ শনিবার দুপুরের পর আসামিদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ আরিফুল হক তপু তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে আসামিদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত আগামী ১১ অক্টোবর জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন এবং আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার তৃতীয় বার্ষিকীতে গত শুক্রবার ঢাবিতে সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। সেখানে আসামিরা কাউকে কিছু না জানিয়েই পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে বেআইনিভাবে সমবেত হয়ে উচ্ছৃঙ্খল বক্তব্য ও স্লোগান দিতে থাকেন।
আসামিরা তাঁদের বক্তব্যে সরকার, সরকারপ্রধান ও বিভিন্ন মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। তখন ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করলে আসামিরা রড, হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এ সময় আসামিরা ১০ হাজার ৫০০ টাকা চুরি করে নেন।
উল্লেখ্য, ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে অভিযোগ করা হয়, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে থাকা চেয়ার ও মাইক ভাঙচুর করেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ছাত্র অধিকার পরিষদের ব্যানার ও ফেস্টুন। এতে পণ্ড হয়ে যায় সমাবেশ।
আদালতের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ
এদিকে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মিছিলসহ আদালতে উপস্থিত হন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর। অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীসহ তিনি অবস্থান নেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গেটের পাশে।
এ সময় নুরুল হক নূর বলেন, ‘আমাদের ২৪ জনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা করেছে ছাত্রলীগ। অথচ মামলা দেওয়া হয়েছে সমাবেশকারীদের বিরুদ্ধে। তবে আদালতের প্রতি আস্থা রেখে কর্মসূচি সমাপ্ত করেছি। আদালতের প্রতি অনুরোধ থাকবে, আমাদের ভাইদের প্রতি অবিচার করবেন না, ন্যায়বিচার করবেন। আমাদের ভাইদের মুক্তি না হলে নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক সংগঠন নিয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ১৬ নভেম্বর
একই আদালত এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।