গজারিয়া (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আজ সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে গোয়ালগাঁও গ্রামের দিলা মিয়ার মুদি দোকানের সামনে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন—হারুন অর রশিদ (৩৫), রনি (৩৪), আক্তার (৪০), মুক্তার (৪২), আনন্দ (২৫), হাসিব (২২) শাহিনূর বেগম (৫৫), শাহ পরান গ্রুপের রিয়াদ হোসেন (২৪) ও আক্তার হোসেন (৪০)।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হোসেন্দী ইউনিয়নে শাহ পরান গ্রুপের সঙ্গে প্রতিপক্ষ হারুন অর রশিদ গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহর পক্ষে অবস্থান নেন শাহ পরান, অন্যদিকে হারুন অর রশিদ গ্রুপের লোকজন অবস্থান নেন আমিরুল ইসলামের পক্ষে।
নির্বাচনে আমিরুল ইসলাম পরাজিত এবং মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ জয়লাভ করায় চাপে ছিল হারুন গ্রুপের লোকজন। এর মধ্যে গতকাল রোববার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার জের ধরে আজ সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে গোয়ালগাঁও গ্রামের দিলা মিয়ার মুদি দোকানের সামনে সংঘর্ষে জড়ায় উভয় পক্ষ। এতে হোসেন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি হারুন অর রশিদসহ তাঁর সমর্থক রনি, আক্তার, মুক্তার, আনন্দ, হাসিব গুলিবিদ্ধ হয়।
হামলার খবর পেয়ে হারুনের চাচি শাহিনূর আক্তার এগিয়ে আসলে তাঁকেও মারধর করা হয়। অন্যদিকে শাহ পরান গ্রুপের রিয়াদ ও আক্তার হোসেন নামের দুজন আহত হয়।
পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ এবং স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। আহতদের মধ্যে সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং দুজনকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত শাহ পরান বলেন, ‘তারা মিথ্যাচার করছে। ঘটনার সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম না, আমি এখনো এলাকার বাইরে। আপনারা চাইলে আমার সঙ্গে দেখা করে যেতে পারেন। শুনেছি এলাকায় টুকটাক গ্যাঞ্জাম হয়েছে। আমাদের কয়েকজন নেতা কর্মীর সামান্য আহত হয়েছে।’
গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের পর বিভিন্ন এলাকায় আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। আজকেও আমার একনিষ্ঠ কর্মী হারুন ও তার পরিবারের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনা ঘটল। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
গজারিয়া থানার ওসি মো. রাজিব খান বলেন, ‘খবর পাওয়ার পর পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে কিনা আপাতত বলতে পারছি না। বিস্তারিত পরে বলা যাবে।’