গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। সমাবেশ শেষে ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য দোয়া করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘হামাসের যোদ্ধারা, লও সালাম লও সালাম’, ‘ইন্তিফাদা ইন্তিফাদা, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘নেতানিয়াহুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘ইসরায়েলের কাপুরুষেরা হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে বক্তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে পবিত্র রমজানে গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিশ্ব মানবতার এই সংকটময় সময়ে মুসলিম বিশ্বকে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তাঁরা। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে হত্যাযজ্ঞ চালানোর দায়ে নেতানিয়াহু সরকার ও ইসরায়েলকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, ‘ইসরায়েলি বর্বররা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে নারী, পুরুষ ও শিশু নির্বিচারে হত্যা করছে। এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে। আমাদের জীবনের শেষ রাজনীতি হবে ফিলিস্তিনের রাজনীতি, জীবনের শেষ যুদ্ধ হবে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির যুদ্ধ।’
মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘নিজেদের আধিপত্যবাদী রাজনীতি বাদ দিয়ে সবাইকে এক হয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিনের ডাক দিতে হবে। আমরা স্বাধীন ফিলিস্তিনের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। আমরা সবাই এক হয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘আমরা যখন দেখি শিশুরা কোনো অপরাধ না করেও সন্ত্রাসী ইসরায়েলের বোমার আঘাতে প্রাণ হারায়, তখন আমাদের হৃদয় ভেঙে যায়। আমরা আগেও এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছি, এখনো জানাচ্ছি এবং যত দিন পর্যন্ত এসব অপরাধ চলতে থাকবে, তত দিন আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।’
আব্দুর রশিদ জিতু আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ নামের যে নিষ্ক্রিয় সংগঠন মানবতার বুলি আওড়ায়, অথচ ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না। তাদের এই নির্লিপ্ততাকে আমরা তীব্র ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছি।’