Ajker Patrika
হোম > সারা দেশ > ঢাকা

নাশতা রেডি করতে বলে বেরিয়ে ফিরে আসেন লাশ হয়ে

জহিরুল আলম পিলু

নাশতা রেডি করতে বলে বেরিয়ে ফিরে আসেন লাশ হয়ে

‘মা নাশতা রেডি করো। আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসতেছি।’ এই বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যান তন্ময়। বাড়ি ফেরে লাশ হয়ে! ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তন্ময়। 

বিলাপ কথাগুলো বলেন তন্ময়ের মা রেবেকা সুলতানা লতা। সাইদুল ইসলাম তন্ময় (২২)। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে রাজধানীর গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের একটি ইলেকট্রনিক দোকানে ৯ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। বাবা শফিকুল ইসলাম রানা সামান্য বেতনে কাজ করেন গুলিস্তান উৎসব পরিবহনের কাউন্টার ম্যান হিসেবে। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে তন্ময় সবার বড়। বড় সন্তান হিসেবে তন্ময় সংসারের হাল ধরে ছিলেন।

বাবা–মায়ের সঙ্গে তন্ময় থাকতেন যাত্রাবাড়ীর ১১৬ (পুরাতন), ১৯১ (নতুন) দনিয়া, রসুলপুর এলাকার একটি দুই কক্ষের টিনশেড বাড়িতে। ছয় সদস্যের টানাটানির সংসার। তাঁদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার এলাহাবাদ গ্রামে। 

তন্ময়ের বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘৫ আগস্ট বেলা সাড়ে ১০টার দিকে তন্ময়কে নিয়ে আমরা সকালের নাশতা খেতে বসব, এমন সময় তন্ময় মাকে বলে, আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে এসে নাশতা খাব। তোমরা খাও। এই বলে সে বেরিয়ে যায়। আমিও নাশতা না খেয়ে ওর পিছু পিছু যেতে থাকি। একপর্যায়ে তন্ময় আমার কাছ থেকে হারিয়ে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে যায়। আমি কিছুক্ষণ পর বাসায় ফিরে নাশতা না খেয়ে ওর জন্য অপেক্ষা করি। তন্ময় বাসায় না আসায় আমি নাশতা খেতে শুরু করি। 

‘নাশতা খাওয়া শেষ না হতেই আমার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। এক লোক বলে, আপনি ///দোলাইপাড় ডেলটা হাসপাতালে আসেন। আমি তাকে বললাম, ওখানে তো আমাদের কোনো রোগী নাই, কেন আসব? তখন সে বলল, আপনার ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। তখন আমার স্ত্রী “আমি কোথায় যাচ্ছি” জিজ্ঞাসা করলেও, আমি কাউকে কিছু না বলে দ্রুত বেরিয়ে যাই। গিয়ে দেখি আমার ছেলের মাথায় গুলি লাগছে। তখনো তার জ্ঞান ছিল। কিন্তু এই হাসপাতাল থেকে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিতে বলে। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর ডাক্তার আমার ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন।’ 

রানা আরও বলেন, ‘মারা যাওয়ার আগের দিন তন্ময় আমাকে বলে, আব্বু আমার দুই বন্ধু আন্দোলনে শহীদ হয়েছে। আমিও যদি শহীদ হতে পারতাম তাহলে ভালো হতো! কিন্তু বাবা আমার শহীদ হলেও কেউ কোনো খোঁজখবর বা সহযোগিতা করতে আসেনি!’

তন্ময়ের মা লতা জানান, তন্ময়ের ক্রিকেট খেলা ছিল প্রিয়। ছুটি পেলেই বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বিভিন্ন মাঠে ক্রিকেট খেলতে যেত। মারা যাওয়ার তিন দিন পর ওর বোনের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বোনের বিয়েতে অনেক আনন্দ করবে বলত। তন্ময় ছিল আমাদের সংসারের অন্যতম উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। 

পাগলপ্রায় মা আরও বলেন, ‘আমি আমার সন্তানকে ফেরত চাই। সে তো কোনো রাজনীতি করত না। কারও সঙ্গে কোনো অন্যায় করত না। বাজে ছেলেদের সঙ্গে আড্ডা দিত না। নেশা করত না। বাসায় থাকত ও কাজে যেত। কিন্তু কেন আমার সন্তানকে মারা হলো? আমি এর বিচার চাই।’

সেনাসদস্যকে এক গাড়ি ধাক্কা দেয়, আরেক গাড়ি পিষে যায়

সালিসে ‘পক্ষপাতিত্ব’: মাইকে ঘোষণা দিয়ে ৩ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ১৫

নারায়ণগঞ্জে পিস্তল-গুলিসহ ২ ভাই গ্রেপ্তার

বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি: এক সপ্তাহেও কোনো গ্রেপ্তার নেই

সৌদিগামী ছেলেকে বিদায় দিতে হোটেলে উঠেছিলেন মিরন, আগুন কেড়ে নিল প্রাণ

অতিরিক্ত ধোঁয়ার কারণে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে: ফায়ার সার্ভিস

দুর্নীতির মামলায় খালাস পেলেন সম্পাদক মাহমুদুর রহমান

খুলনার সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

লালমাটিয়ায় তরুণীকে মারধর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মন্তব্যে বিক্ষোভ, কুশপুত্তলিকা পোড়ালেন নারীরা

রমজানে ১০ টাকা লিটার দুধ বিক্রি করছে জেসি এগ্রো