গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিসহ ৪ দফা দাবিতে অনড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার আন্দোলনের তৃতীয় দিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক সংবাদ-সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন এবং সারা দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখ সড়কে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে মানববন্ধনে এসে যোগ দেন। সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শিক্ষকদের অনেকেই।
অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের সুষ্ঠু বিচার না হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
জাতির পিতার পুণ্যভূমিতে যে ঘটনা ঘটেছে, তা সবার জন্যই দুঃখজনক উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে এ ঘটনা প্রথম, আশা করি এটাই শেষ হবে। আমরা স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করি দ্রুত সুষ্ঠু বিচার পাব। শিগগিরই আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনায় বসব, যাতে করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।’
এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চোখে কালো কাপড় বেঁধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মৌন প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের প্রতীকী ফাঁসির আয়োজন করে। বিকেল ৫টায় ধর্ষকের ফাঁসি চাই স্লোগান নিয়ে হলের আবাসিক ছাত্রীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
প্রসঙ্গত, ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের তিন দিনের আন্দোলন ও প্রশাসনের দেওয়া আশ্বাসের ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা পার হওয়ার পর গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে ৪ দফা দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে এবং সন্ধ্যা ৭টায় মশাল মিছিল বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। আজ শনিবার সকাল ৭টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অবস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি শুরু করে।
উল্লেখ্য, ধর্ষণের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর থানার পুলিশ পিয়াস সিকদার (২৪), অন্তর (২২), জীবন (২২) ও ফরিদ (২৬) নামে চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গতকাল ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ শনিবার দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ-সম্মেলনে ৬ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রাকিব ওরফে ইমন (২২), পিয়াস ফকির (২৬), প্রদীপ বিশ্বাস (২৪), মো. নাহিদ রায়হান (২৪), মো. হেলাল (২৪) ও তুর্য মোহন্ত (২৬)।