গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুটে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে প্রায় সাড়ে ১৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৬ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। ঝড়ের কারণে ৩, ৪ ও ৬ নম্বর ঘাটের পন্টুন ছিঁড়ে নদীতে পরে থাকায় ঘাটগুলো বন্ধ রয়েছে। ঘাটগুলো সচল করতে কাজ করছে মেরিনের আইটি জাহাজ।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার সকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে হালকা বৃষ্টিসহ ঝোড়ো বাতাসে নদীতে বড় বড় ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। দুপুরের পর থেকে বাতাসের গতি বেড়ে গেলে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সাড়ে ১৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পুনরায় এই নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে দেখা যায়, ফেরি ঘাট এলাকায় শতাধিক ঢাকামুখী গাড়ি নদী পাড়ি দিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া কফিলউদ্দিন ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার লম্বা লাইনে অপেক্ষা করছে। আগের দিন আসা মোটরসাইকেল চালকেরা সারা রাত না ঘুমিয়েই ঘাটে অপেক্ষায় ছিলেন। সকাল ৯টার দিকে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে এসে দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ঘাটে ভেড়ে ইউটিলিটি ফেরি ‘চন্দ্রমল্লিকা’। অপরদিকে একই সময়ে ‘বীরশ্রেষ্ঠ মো. রুহুল আমিন’ যানবাহন বোঝাই করে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এদিকে ঝড়ের কারণে ৩, ৪ ও ৬ নম্বর ঘাটের পন্টুন ছিঁড়ে নদীতে পরে আছে। ঘাটগুলো সচল করতে কাজ করছে মেরিনের আইটি জাহাজ।
৭ নম্বর ফেরিঘাটে অপেক্ষারত মোটরসাইকেল চালক মো. বাবুল হোসেনের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এ প্রতিনিধির। বাবুল হোসেন ঝিনাইদহ থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় দৌলতদিয়া ঘাটে এসে আটকা পরেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় ঘাটে এসে জানতে পারি ফেরি বন্ধ। বাড়িতে ফিরে যাব তারও উপায় ছিল না। সারা রাত ৭ নম্বর ফেরি ঘাটের একটা হোটেলে জেগে কাটাতে হয়। আজ সিকাল ৯টার দিকে ফেরি চলাচল শুরু হলে স্বস্তি ফিরে পাই।’
দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাটের ফেরি থেকে নামছিল একটি পণ্যবাহী ট্রাক। এ সময় কথা হয় চালক আব্দুস ছালামের সঙ্গে। তিনি জানান, ঢাকা থেকে বিকেলে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা করেন তারা। রাত ৭টার দিকে ঘাট থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে ছিলেন। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় সারা রাত গাড়িতেই অপেক্ষায় ছিলেন। দীর্ঘ সাড়ে ১৬ ঘণ্টা লাইনে থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় পাটুরিয়া থেকে ফেরি চলাচল শুরু হলেও তাদের ফেরি পেতে সাড়ে ৯টা বেজে যায়।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়ায় ফেরি নোঙর করে ছিল। ফেরি বন্ধের সাড়ে ১৬ ঘণ্টা পর সকাল ৯টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরি ছেড়ে যায়। ফেরি বন্ধের কারণে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হওয়ায় দৌলতদিয়া প্রান্তে বিভিন্ন ধরনের শতাধিক যানবাহন আটকে ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে যানবাহনের সিরিয়াল কমে যাবে।’