গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে ভারত থেকে আনা ওষুধের দাম বেশি চাওয়ার কারণে মারধর করে এক ট্রাভেল ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনা ঘটে। এর প্রায় ১৫ মাস পর জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তারের পর তাদের মহানগর হাকিম আদালতে নেওয়া হলে গতকাল সোমবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে এসব তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুরের পিবিআই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান। গত ১৫ অক্টোবর রাতে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার টান কড্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার শাহজাতপুর গ্রামের খান পাড়া এলাকার মৃত সরাফত আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৪) এবং গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার মৃত বারেক শেখের ছেলে ফারুক আহম্মেদ (৫২)।
হত্যার শিকার ট্রাভেল ব্যবসায়ী হলেন—হেদায়েত লস্কর (৪২)। তিনি নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার বাঐসোনা এলাকার মৃত আবুল কাশেম লস্করের ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার কড্ডা গোলটেক এলাকায় থেকে ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করতেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, হেদায়েত লস্কর একজন ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায়ী। হেদায়েত লস্কর ভারত থেকে ওষুধ এনে বিভিন্ন লোকের কাছে সাপ্লাই করতেন। আসামি তারিকুজ্জামানের লিভারের সমস্যা থাকায় হেদায়েত লস্করের মাধ্যমে ভারত থেকে ওষুধ আনতেন। করোনা মহামারির কারণে ভারত থেকে আনা ওষুধের দাম বৃদ্ধি পায়। ২০২১ সালের ২৫ জুলাই রাতে আগের দামের থেকে ৩ হাজার টাকা বেশি দাবি করেন হেদায়েত লস্কর। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তারিকুজ্জামান উত্তেজিত হয়ে হেদায়েতকে কিল ঘুষি মারেন। এতে হেদায়েত মাটিতে পড়ে গেলে তাকে লাথি মেরে ড্রেনে ফেলে দেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মাকছুদের রহমান আরও জানান, এ সময় পাশে থাকা আরেক আসামি আনোয়ার হোসেন এবং তারিকুজ্জামানের শ্বশুর আসামি ফারুক আহম্মেদ ক্ষিপ্ত হয়ে হেদায়েত লস্করের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। খবর পেয়ে হেদায়েতের স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হেদায়েতকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে এই হেদায়েতের স্ত্রী যুথি আক্তার বাদী হয়ে বাসন থানায় মামলা করেন।
পিবিআই কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, বাসন থানা–পুলিশ তদন্ত করে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। বাদী ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে নারাজির আবেদন করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত বাদীর নারাজির আবেদন মঞ্জুর করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।