টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
‘আমার পেছনে বহুত মানুষ লাগছে। কিন্তু কিছুই ছিঁড়তে পারেনি। এসব ভিডিও বা নিউজ করে কোনো কিছুই করতে পারবেন না। এইগুলো সব খালি খালি। কোনোভাবে কিছুই করতে পারবেন না।’
দম্ভের সুরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেছেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের চিংগড়ী গ্রামের অপূর্ব মণ্ডল অপু নামের এক কথিত চিকিৎসক। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চিংগড়ী গ্রামে তাঁর চেম্বারে এসব কথা বলেন তিনি। এ ঘটনার ১ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক অপু নামের ওই কথিত চিকিৎসকের অপচিকিৎসা ও নামের আগে ডাক্তার লেখা নিয়ে কথা বলতে গেলে উত্তেজিত হয়ে যান তিনি। সাংবাদিকদের হুমকির সুরে ছবি বা ভিডিও করতে নিষেধ করে অপূর্ব মণ্ডল অপু বলেন, ‘আমার পেছনে বহুত মানুষ লাগছে। কিন্তু কিছুই ছিঁড়তে পারেনি। এসব ভিডিও বা নিউজ করে আমার লোমটাও ছিঁড়তে পারবেন না। এইগুলো সব খালি খালি।’ তখন সাংবাদিকেরা ডাক্তারি সনদ দেখতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কেন দেখাব? প্রয়োজনে ড্রাগ সুপারকে দেখাব। আপনারা যা পারেন করেন।’
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমরান শেখ বলেন, ‘এমবিবিএস ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন অপু নামের কথিত ওই চিকিৎসক। নিজের ওষুধের দোকানে বসে রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র লিখে নিজেই ওষুধ বিক্রি করেন তিনি। এ ছাড়া গায়ের লেখা দামের চেয়ে বেশি দাম রাখা, প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক লেখাসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে গেলে কথিত ওই চিকিৎসক সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ করেন। এ ছাড়া সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখানোর জন্য কয়েকজনকে ফোনও করেন অপু। এগুলো খুবই দুঃখজনক।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সনদ ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করতে পারেন না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি দেখেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’