গাড়ি কেনার কথা বলে ‘টেস্ট ড্রাইভ’ বা পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে দেখার কথা বলে গাড়ি ছিনতাইয়ের অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত ৮ মার্চ রাজধানীর শাহবাগ মেট্রো স্টেশনের নিচ থেকে প্রায় ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি টয়োটা হ্যারিয়ার (হাইব্রিড) গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার আসামির নাম আহসান আহমেদ ওরফে মাসুম (৩৬)। তিনি বুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন। গতকাল সোমবার রাতে গুলশান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ সময় তাঁর কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া জিপ গাড়ি, একটি ম্যাগাজিনসহ পাঁচ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশি পিস্তল ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানান, মাসুম প্রযুক্তি জ্ঞানে খুবই দক্ষ এবং গাড়ি সম্পর্কে ভালো ধারণা রয়েছে। বিভিন্ন শোরুমের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে তিনি এভাবে গাড়ি নিয়ে যেতেন। পরে গাড়ির মালিকদের কাছে গাড়ি ফেরত দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতেন।
ডিসি মাসুদ আলম জানান, পরীবাগ গার্ডেন টাওয়ারের ডিলস্ নামক একটি গাড়ির শোরুমের স্বত্বাধিকারী মাশরুর নাঈরের কাছে গত ৭ মার্চ একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন কল করে টয়োটা হ্যারিয়ার জিপ গাড়ি কেনার আগ্রহ দেখান। পরদিন সন্ধ্যায় সেই ব্যক্তি গ্যারেজে গাড়ি দেখতে আসেন এবং টেস্ট ড্রাইভের কথা বলে গাড়িতে উঠে পিয়াল মাহমুদ নামের একজনের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার পর ছিনতাইকারীরা গাড়ির মালিক মাশরুর নাঈরের হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ পাঠিয়ে মামলা না করার এবং বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ না করার জন্য হুমকি দেন।
এ ঘটনায় গাড়ির মালিক শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্তকালে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা হয়। এরপর সোমবার রাতে গুলশানের একটি হোটেলের সামনে থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিসি মাসুদ আলম আরও জানান, গ্রেপ্তার মাসুম পেশাদার অপরাধী এবং এর আগেও তিনি ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন। তিনি চোরাই গাড়ি বিক্রি করতে না পারায় মালিকের কাছেই মুক্তিপণ দাবি করতেন। এর আগে তিনি তেজগাঁও থেকে ছিনতাই করা একটি গাড়ির জন্য ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়েছিলেন। মাসুমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক গাড়ি ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে।
ঈদে নিউমার্কেট, শাহবাগ, ধানমন্ডিসহ রমনা বিভাগের নগরবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি মাসুদ আলম বলেন, ঈদ সামনে রেখে পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। চেকপোস্ট, টহল ও মোটরসাইকেলে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি করছে। এ ছাড়া অন্যান্য বাহিনী এবং প্রতিটি মার্কেটে পুলিশের বিশেষ দল মোতায়েন রয়েছে।