ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধে বিএনপি ও আওয়ামী লীগে দুই দলের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বিএনপির ১৫ সমর্থক আহতসহ ১৫টি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আজ শুক্রবার উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে সজীব মাতুব্বর নামে উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসাধীন।
বিএনপির দলীয় সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও তিনবারের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাহিদুজ্জামান সাহিদ মাতুব্বর ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হারুন মাতুব্বরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত ২৪ ডিসেম্বর হারুন মাতুব্বরের সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহসভাপতি হামিদ মাতুব্বরকে মারধরের ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার জেরে আজ সকালে সাহিদ মাতুব্বরের গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র, রামদা নিয়ে হারুন মাতুব্বরের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালান। পরে দুই গ্রুপ দেশীয় নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া করে। এ সময় হারুন মাতুব্বরের সমর্থকদের দুটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে অন্তত ১৫টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের করেন সাহিদ মাতুব্বরের সমর্থকেরা। পরে থানা-পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, সাহিদ মাতুব্বরের ১৫ থেকে ২০ জন সমর্থক দেশীয় অন্ত্র ও রামদা নিয়ে যুবদল নেতা সজীব মাতুব্বরের বাড়িতে ঢুকে পড়েন। এ সময় হারুন মাতুব্বর কোথায় বলে তাঁদের চিল্লাতে দেখা যায়। পরে সজীব মাতুব্বরকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। এ ছাড়া অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ফাঁকা মাঠের মধ্যে কয়েক শ লোক দেশীয় অস্ত্র হাতে অবস্থান করছেন। একপর্যায়ে হারুন মাতুব্বরের সমর্থকদের ধাওয়া দেন।
স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হারুন মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, ‘সাহিদ মাতুব্বরের সঙ্গে আমার প্রায় চার বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। আজ সকাল ৭টার দিকে সাহিদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তার ভাই-ভাতিজারা আমার লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করে লুটপাট করে নিয়ে যায় এবং অনেককে কুপিয়ে আহত করে। পরে আমার লোকজন প্রতিরোধ করতে তাদের ধাওয়া দেয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাহিদুজ্জামান সাহিদ মাতুব্বর বলেন, ‘আমি গত ১৫ বছর ধরে এলাকায় কোনো দল চালাই না। ওরা শুধু শুধু আমার নাম বলতেছে। আমি বাড়িতেও থাকি না। আজকের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’ হারুন মাতুব্বরের সঙ্গে আমেরিকাপ্রবাসী খোকন মাতুব্বর গ্রুপের বিরোধ চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে খোকন মাতুব্বর প্রবাসে থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকা শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।