মিরপুরের জাহাজ বাড়িতে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে ৯ জনকে হত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। ট্রাইব্যনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) একেএম শহিদুল হক, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও মিরপুর জোনের তৎকালীন এসি জসিম উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার তাঁদের হাজির করা হলে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এর আগে তিনজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে ওই ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয় প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে। পরে ট্রাইব্যুনাল তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৭ মে দিন ধার্য করা হয়েছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০১৬ সালে মিরপুর এলাকায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ৯ জন নিহত হয়। ওই ঘটনা ‘জাহাজ বাড়ি ঘটনা’ নামে পরিচিত।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জুলাই–আগস্টে গণহত্যার এক মামলায় বাড্ডা–রামপুরা এলাকার সাবেক এ এস আই চঞ্চল চন্দ্র সরকার ও সাবেক এসি রাজন কুমার সাহাকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পরে তাঁদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২৮ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মিরপুর এলাকায় হত্যার ঘটনায় করা মামলায় মিরপুর এলাকার সাবেক এডিসি এম এম মইনুল ইসলামকে এদিন ট্রাইবুনালে হাজির করা হয়। পরে প্রসিকিউশনেন পক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৮ জুন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন।
শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, বিএম সুলতান মাহমুদ, গাজী এমএইচ তামিম, শহিদুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ, ব্যারিস্টার মইনুল করিম প্রমুখ।
আদালত থেকে বের হয়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ২০১৬ সালে রাজধানীর কল্যাণপুরের জাহাজ বাড়ি নামের একটি বাড়িতে ৯ তরুণকে আটকে রেখে সোয়াত, সিটিটিসিসহ গিয়ে বাসার মধ্যে মধ্যে গুলি করে হত্যা করে।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা জানতে পেরেছে, এই ৯ তরুণকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে আনা হয়েছিল। কেউ কেউ দুই–তিন মাস ধরে ডিবি হেফাজতে ছিলেন। পরে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গি বলে প্রচার করা হয়।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সে সময় (আওয়ামী লীগ সরকার) জঙ্গি নাটক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। একটি ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করার জন্য ইসলামিক ভাবধারার মানুষদের জঙ্গি নাম দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।