রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী টার্মিনালে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক গ্রাহক হয়রানি, চাঁদাবাজিসহ অনিয়মের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনভর দুদকের পৃথক তিনটি টিম এই অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানান।
দুদকের অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা জানান, অভিযানে সায়েদাবাদ টার্মিনালে দূরপাল্লার বাসসহ লোকাল বাসগুলোর কাউন্টারে কোনো নির্দিষ্ট ভাড়ার তালিকা পাননি তাঁরা। এ ছাড়া নিয়ম না মেনে একেকজনের কাছ থেকে একেক রকম ভাড়া আদায় করতেও দেখেছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
দুদক কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বলেন, চাঁদা ও সমিতির নামে টার্মিনালগুলো থেকে আদায় করা বিপুল টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে তুলে থাকতে পারে। কারণ, এসব টাকা আদায়ের কোনো বৈধতা বা নিয়ম নেই।
সূত্রটি জানায়, এ ছাড়া প্রতিটি গাড়িকে সিরিয়ালে ছাড়ার জন্য বাস মালিক সমিতিকে একটি পরিবহন ছাড়পত্রনামীয় ভাউচারে ‘ছাড়পত্র’ বাবদ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দিতে হয়। এভাবে টাকা আদায়ের কোনো নিয়ম না থাকলেও শ্রমিকদের নাম ভাঙিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে জানায় তারা।
একই দিনে অভিযান চালাতে গিয়ে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় এবং হয়রানির সত্যতা পেয়েছে দুদক। এই টার্মিনালে প্রতিটি গাড়িকে সিরিয়ালে ছাড়ার জন্য বাস মালিক সমিতিকে একটি পরিবহন ছাড়পত্রের নামে ১১০ টাকা আদায় করতে দেখা যায় বলে জানায় দুদক।
দুদক কর্মকর্তারা জানান, দূরপাল্লার বাসগুলোর মাঝপথে সাভার, চন্দ্রা, গাজীপুর মালিক সমিতিকে, টিআই এবং সার্জেন্টকে মাসিক বা দৈনিক ভিত্তিতে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে চাঁদা দিতে হয়। তবে এ টাকা কী প্রয়োজনে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার কোনো তথ্য অভিযানকালে পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে ইজারা ভিত্তিতে দৈনিক বাসপ্রতি ৫০ টাকা চাঁদা তুলতে দেখা যায়। এর বৈধতা যাচাই করতে এ-সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনাপূর্বক এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন প্রতিবেদন আকারে দাখিল করবে।