মাদারীপুরের সদর উপজেলায় পরিবারের সবাইকে অচেতন করে ঘর থেকে স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করে পালানোর সময় দুজনকে ধরে পিটুনি দিয়েছে গ্রামবাসী। পুলিশ তাঁদের আটক করে মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের পশ্চিম রঘুরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের সবাইকে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করে পিটুনি খাওয়া ওই দুই ব্যক্তি। এ ছাড়া অচেতন অবস্থায় ভুক্তভোগী গৃহকর্তা গোলাম রহমান ফকির ও তাঁর স্ত্রীকে একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আটক দুজন হলেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা হাসানপুর গ্রামের আমিন খাঁ (২৮) ও দিঘলিয়া এলাকার রুবেল মিয়া (৩৮)।
জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে পশ্চিম রঘুরামপুর গ্রামের গোলাম রহমান ফকিরের বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজে আসেন কয়েকজন শ্রমিক। এলাকাবাসীর ধারণা, তাঁর শনিবার সন্ধ্যায় ইফতারির খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে দেন। সেই খাবার খেয়ে বাড়ির লোকজন অচেতন হয়ে পড়েন। ভোরে সুযোগে ঘর থেকে স্বর্ণালংকার, টাকা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যান শ্রমিকেরা। সাহরি শেষে নামাজ পড়তে বের হন প্রতিবেশীরা। এ সময় গোলাম রহমান ফকিরের ঘরের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে তাঁদের সন্দেহ হয়। তখন ভেতরে ঢুকে বাড়ির পরিবারের সবাইকে অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় বাড়ির রাজমিস্ত্রিরা কেউ ছিলেন না।
প্রতিবেশীরা শ্রমিকদের খুঁজতে থাকেন। মোটরসাইকেল নিয়ে তল্লাশি চালিয়ে একপর্যায়ে পাশের হাজমকান্দি গ্রাম থেকে ইজিবাইকে করে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুই শ্রমিকদের ধরে পিটুনি দেন এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে আমিন খাঁ ও রুবেল মিয়াকে আটক করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে। এ সময় শ্রমিকদের কাছ থেকে পুলিশ টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করে।
গোলাম রহমান ফকিরের মেয়ে তানিয়া আফরোজ বলেন, শ্রমিক সেজে আমাদের বাসায় কাজে আসেন তাঁরা। মূলত তাঁরা মুখোশধারী চোর। তাঁদের কঠিন শাস্তির দাবি জানাই।
মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ‘গণপিটুনিতে আহত দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া অচেতন অবস্থায় একই পরিবারের দুজনকে ভর্তি করা হয়।’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকছেদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লুট হওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আটক দুজনকে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে ইরান নামের আরও একজন পালিয়ে যান। তাঁকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’