নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
শৈশবে বাবাকে হারিয়ে মায়ের কাছে বেড়ে ওঠেন এস এম ওয়াহিদ হোসেন ওরফে পুলক। বাবা ছাড়া পৃথিবীতে পদে পদে হন লাঞ্ছিত। কখনো এলাকার মুরব্বিদের কটু কথা, আবার কখনো নিরাপত্তাকর্মীদের চড়-থাপ্পড়। তখন থেকেই মনে জেদ; একদিন উত্তরার ডন হবেন। ধারাবাহিক ৯টি খুনের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু প্রথম খুনের পরেই ধরা পড়েন তিনি।
রাজধানীর দক্ষিণখান থানার তোফাজ্জল চেয়ারম্যানের বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পুলক এমনই জবানবন্দি দিয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের কাছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে পুলককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নিহত নিরাপত্তাকর্মী বিভিন্ন সময় পুলককে চড়-থাপ্পড় দিত। এর প্রতিশোধ নিতেই সে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে। বাবা মারা যাওয়ায় পারিবারিকভাবে অবহেলার শিকার পুলক সিরিয়াল কিলিংয়ের পরিকল্পনা করে। যার অংশ হিসেবে নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করে।’
১৮ মার্চ রাতে এই হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী খোরশেদা খাতুন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে নেমে পুলককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা বিভাগ।
ডিবির প্রধান বলেন, ‘নির্যাতন ও অবহেলার প্রতিশোধ নিতে দক্ষিণখানসহ উত্তরা এলাকার ত্রাস হতে গিয়ে খুনের পরিকল্পনা করে এই যুবক। তার লক্ষ্য ছিল ৯টা হত্যা করা। যার প্রথমটি হলো নিরাপত্তাকর্মী আফিল মিয়া। সে যদি হত্যা করতে পারে তাহলে সন্ত্রাসী হিসেবে মানুষ চিনবে, বডি গার্ড থাকবে। তার কথায় মানুষ উঠবে-বসবে। অর্থাৎ রসু খাঁ, এরশাদ শিকদারের মতো বড় সন্ত্রাসী হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। এই কথা তার মাকেও বলেছে।’
আফিলকে হত্যার আগে ইয়াবা সেবন করেন পুলক। এরপর এসে তাঁকে হত্যা করেন। আর ইয়াবা সেবনের বিষয়ে পুলক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, ‘ইয়াবা সেবন করলে যে পিনিক হয়, মানুষ হত্যা করে তার চেয়ে বেশি পিনিক পেয়েছি।’
হারুন অর রশীদ বলেন, আসলে ডন হওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর। কিন্তু ডিবি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করায় তাঁর এই স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে গেল। পুলক মাধ্যমিক পাস। বাবা মারা যাওয়ায় সে দক্ষিণখানে মামার বাসায় থাকতেন।