আবারও র্যাম্পে যাত্রীবাহী বাস আটকে যাওয়ায় শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌরুটের নরসিংহপুর ১ নম্বর ফেরিঘাটের যানবাহন পারাপার বন্ধ হয়ে গেছে। মেঘনায় পানি বৃদ্ধি ও জোয়ারের পানিতে সংযোগ সড়ক ও র্যাম্প তলিয়ে যাওয়ায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বন্ধ থাকছে ১ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার। এরপর মেঘনার তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে সময় লাগছে দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে দীর্ঘ সময় একটি মাত্র ঘাট ব্যবহার করে ধীর গতিতে যানবাহন পারাপার করায় সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। ফেরিঘাট থেকে খায়েরপট্টি ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়কে আটকা পড়েছে ৭ শতাধিক যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন। দীর্ঘ সময় ঘাটে আটকা থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী, চালক ও ব্যবসায়ীরা।
নরসিংহপুর ফেরিঘাট সূত্রে জানা যায়, আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে ঘাটের ১ নম্বর পন্টুন দিয়ে ফেরিতে উঠতে গিয়ে র্যাম্পে আটকা পড়ে একটি যাত্রীবাহী বাস। জোয়ারের পানিতে সংযোগ সড়ক ও র্যাম্প তলিয়ে থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে ১ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে অবশিষ্ট ২ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করায় ঘাটে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে গতকাল শুক্রবার সকালেও ঘাটের ১ নম্বর পন্টুনের র্যাম্পে আটকা পরে একটি যাত্রীবাহী বাস। ৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর র্যাম্প সংস্কার করে ওই দিন বেলা ১২টা থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো আবারও ১ নম্বর ঘাটের র্যাম্পে বাস আটকা পরায় আবারও যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে।
বাংলা বাজার-শিমুলিয়া রুটে ফেরি চলাচল সীমিত হওয়া চাপ বেড়েছে শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌরুটে। তার ওপর মেঘনায় পানি বাড়ায় তীব্র স্রোতের কারণে পারাপারে সময় লাগছে দ্বিগুণেরও বেশি। এই রুটে থাকা ৬টি ফেরির মধ্যে গত বৃহস্পতিবার থেকে ১টি ফেরি বিকল হয়ে পড়ায় যানবাহন পারাপারে ব্যবহার হচ্ছে ৫টি ফেরি। ফলে শরীয়তপুর প্রান্তে পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পরেছে অন্তত ৭ শতাধিক যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন।
সৌদিয়া পরিবহনের যাত্রী আমিনুল ইসলাম বলেন, গতরাতে ঘাটে এসেছি। এখনো আমাদের গাড়িটি টার্মিনাল সড়কে যেতে পারেনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চরম ভোগান্তিতে রয়েছি। এখানে থাকা খাওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায় বাসের মধ্যেই সময় পার করতে হচ্ছে। আজকের মধ্যে চট্টগ্রাম পৌঁছতে না পারলে খুবই সমস্যায় পড়তে হবে। এই ঘাটে ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি না করা পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হবে না।
এ বিষয়ে নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রত্যেক বছর মেঘনায় পানি বৃদ্ধির শুরু থেকেই নরসিংহপুর ফেরিঘাটের পন্টুনের র্যাম্প ও সংযোগ সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। অস্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধানে ইট ও বালু দিয়ে র্যাম্পটি উঁচু করা হয়েছে। তাতেও কাজ হচ্ছে না। জোয়ারের সময় পানির নিচে তলিয়ে যায় পন্টুনের এই অংশটুকু। সড়ক উঁচু করে পুনরায় নতুন পন্টুন স্থাপন করা হলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব।
ব্যবস্থাপক আরও বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঘাটে যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সহজ যোগাযোগের জন্য ২০০০ সালে শরীয়তপুরের-চাঁদপুর নৌরুট চালু হয়।