নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নাটোরের গুরুদাসপুরে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ‘জয় বাংলা’স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে আগামী ১১ নভেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
এর আগে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম নবী হাজির হন এবং ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন। জেলা শিক্ষা অফিসারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী মোস্তাক আহমেদ। শিক্ষকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী বশির আহমেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।
হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেওয়ায় তার নির্দেশে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
রিটকারী আইনজীবী বশির আহমেদ বলেন, শুনানিতে হাইকোর্ট শিক্ষা অফিসারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এমপি হোক আর যেই হোক কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। এমপির নির্দেশে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করে আপনি নিজেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। যে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ শিক্ষক মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে এটা আপনার বিরুদ্ধেও আনা হতো। যেহেতু ক্ষমা চেয়েছেন, তাই আপনার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না’।
আদালত শিক্ষা অফিসারকে আরও বলেন, জয় বাংলা রাষ্ট্রীয় শ্লোগান। এটা স্কুলে বা স্কুলের বাইরেও দিতে পারে। শিক্ষকের বরখাস্তের আদেশ বেআইনি। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকালে জয় বাংলা স্লোগানের বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।
গত ২২ আগস্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম নবীর সই করা এক চিঠিতে গুরদাসপুর উপজেলার দড়িকাছিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার আগে ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তিনি দোষ স্বীকার ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে জবাবের বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠানো হলে তিনি সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন। পরে জনস্বার্থে শিক্ষকের পক্ষে রিট করেন আইনজীবী বশির আহমেদ।