সাভারের আশুলিয়ায় দাফনের প্রায় ৬ মাস পর চারটি লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ। আদালতের নির্দেশনায় আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে আশুলিয়ার বিভিন্ন কবরস্থান থেকে লাশগুলো উত্তোলন করা হয়।
পরে সেগুলো সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহকমিশনার (ভূমি) উপস্থিত ছিলেন।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের দক্ষিণ বাইপাইল চারালপাড়া কবরস্থান থেকে জাহিদুল হাসান সাগর (২৮) নামের একজনের লাশ উত্তোলন করা হয়। তিনি রংপুর জেলার তাজহাট থানার দুর্গাপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে।
আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলাম (৩১) নামের এক ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। পরে ৬ আগস্ট সকালে তাঁকে ভাদাইল পবনারটেক কবরস্থানে দাফন করে পরিবার। এ ঘটনায় ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছিল পরিবার।
এদিকে আশুলিয়ার বগাবাড়ী আমতলা কবরস্থান থেকে আরও দুটি লাশ ডিএনএ টেস্টের জন্য উত্তোলন করা হয়। গত ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ এই দুটি লাশ অজ্ঞাতনামা হিসেবে স্থানীয়রা দাফন করেছিলেন। পরে একটি ভিডিওতে লাশের ছবি দেখে নিহত আবুল হোসেনের স্ত্রী লাকী আক্তার স্বামীকে চিনতে পারেন। তবে একই সঙ্গে দুটি অজ্ঞাতনামা লাশ থাকায় পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন। লাশ উত্তোলনের সময় লাকী আক্তার উপস্থিত ছিলেন। পশ্চিম বাইপাইল এলাকায় ভাড়া থাকতেন তাঁরা। তাঁদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়।
আরেকটি লাশ এখনো অজ্ঞাতনামা রয়েছে। তাঁর পরিবার-স্বজন পাওয়া যায়নি।
লাকী আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী হলুদ জার্সি পরে বের হয়েছিলেন। ২৫ দিন পর একটি ভিডিওতে হলুদ জার্সি দেখে আমি নিশ্চিত হই এটাই আমার স্বামী। পরে খোঁজ পাই তাঁকে কোথায় দাফন করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে অজ্ঞাত আরও একটি লাশ থাকায় আজ লাশ তোলা হচ্ছে। স্বামীর লাশ বুঝে পেতে চাই এবং তাঁর হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানা এলাকায় বেশ কিছু হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলো নিয়ে পরে মামলাও করা হয়েছে। তখন লাশগুলো সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল। মামলার তদন্তের স্বার্থে লাশগুলোর সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রয়োজন, তাই বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনায় লাশগুলো উত্তোলন করা হয়। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।
আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহকমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আক্তার বলেন, বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনায় ৪টি লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য এগুলো পাঠানো হবে।