ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করাসহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমে নিহত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন এবং নৌ-দুর্ঘটনা সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ ১২টি বেসরকারি সংগঠন। আজ শনিবার ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার শততম দিন পূর্তিতে এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনগুলোর নেতারা এসব দাবি জানান।
দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বৈত অবস্থানে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে যাত্রীভর্তি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা এই প্রথম হলেও এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি এখনো নিশ্চিত হয়নি। সরকারি ও নাগরিক তদন্ত কমিটির আলাদা প্রতিবেদনে লঞ্চের চারজন মালিক, দুজন মাস্টার, দুজন ড্রাইভারসহ মোট ১২ জনকে দায়ী করা হয়। যাঁদের মধ্যে ফিটনেস প্রদানকারী শিপ সার্ভেয়ারসহ চার সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। অভিযুক্ত ১২ জনের মধ্যে চার মালিকসহ আটজনের বিরুদ্ধে নৌ আদালতে মামলা দায়ের ও তাঁদের সাতজনকে কারাবন্দী করা হলেও চার সরকারি কর্মকর্তা এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। তাঁদের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার ও সাময়িক বরখাস্ত না করা হলে এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার তদন্ত কার্যক্রম প্রভাবিত হবে এবং তাঁরা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়ে যাবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে।
নদী, নৌপরিবহন খাত, পরিবেশ ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের কোথাও না কোথাও একের পর এক লঞ্চসহ বিভিন্ন ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটলেও এসব নিয়ন্ত্রণ বা সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনার জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এ ছাড়া দুর্ঘটনার জন্য দায়ী সরকারি কর্মকর্তাদের দৃশ্যমান শাস্তি না হওয়ায় সারা দেশে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নাকের ডগায় অসংখ্য অবৈধ (ত্রুটিপূর্ণ ও অনিবন্ধিত) নৌযান চলাচল করছে, যথাযথভাবে পরীক্ষা না করে চলাচলের অযোগ্য নৌযানকে ফিটনেস সনদ প্রদান ও বিভিন্ন নৌপথে চলাচলের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। এতে অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত ও অর্ধশত মানুষ নিখোঁজ হন। গুরুতর দগ্ধ হন ৭২ জন।