নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পুঁজিবাদের সঙ্গে সাহিত্যের উদ্দেশ্য পরস্পর বিরোধী উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যাটম বোমার চেয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।’
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে মাসিক ‘কালি ও কলম’ পত্রিকার ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৮ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি তিন দিনব্যাপী সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিবাদের সঙ্গে সাহিত্যের উদ্দেশ্য পরস্পর বিরোধী। উন্নয়নের সর্বশেষ অবদান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যাটম বোমার চেয়ে বিপজ্জনক হতে পারে। এর মালিকানা অল্প কয়েকজনের হাতে চলে গেলে এর পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা কল্পনা করা যায় না।’
ফ্রানৎস কাফকার ‘দ্যা মেটামরফোসিস’ নাটকের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘কাফকা ইহুদী ছিলেন। তিনি ইহুদিদের গণহত্যার শিকার হতে দেখেছিলেন। এখন ইহুদিরা ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালাচ্ছে। পুঁজিবাদের ভেতরেই গণহত্যার ব্যবস্থা অন্তর্নিহিত থাকে।’
বিশ্বব্যাপী সংকট আজ অনেক বেশি ঘনীভূত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সংকট ঘনীভূত হচ্ছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার কারণে। এর থেকে মুক্তির জন্য সাহিত্য আমাদের প্রধান হাতিয়ার।’
সভায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক চিন্ময় গুহ বলেন, ‘একটা পণ্যায়িত সমাজে আমরা বসবাস করছি। এই সমাজ সাহিত্যকেও পণ্যে রূপান্তর করেছে। সাহিত্যের প্রধান কাজ আত্ম-উন্মোচন। আজকে আমাদের বিশ্ব মানুষ হতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে শিল্পী ও ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী বলেন, ‘সাহিত্য, ছবি যা কিছুই আমরা করি সবকিছুতেই মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা আসে। সেখানে অনেক সময় গণতন্ত্র, ধনতন্ত্র, সমাজতন্ত্রের কথাও আসে। তবে আমরা একটা ঘরের মধ্যেই আবদ্ধ আছি। আমাদের আরও নতুন করে মানুষের জন্য ভাবতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন—ইতিহাসবিদ ও অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, কালি ও কলমের সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি প্রফেসর ইমেরিটাস সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, প্রকাশক আবুল খায়ের ও সম্পাদক সুব্রত বড়ুয়া।
আগামী দুই দিন সাহিত্য সম্মেলনের মোট সাতটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। নানা বিষয় নিয়ে আজ আয়োজিত এসব অধিবেশনে নবীন-প্রবীণ সাহিত্যিক, শিল্পী ও বিশিষ্টজনেরা অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।