শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে সত্তরোর্ধ্ব নানাকে ভর্তি করিয়েছিল স্কুলছাত্র জিহাদ হাওলাদারের স্বজনেরা। সেখানে চিকিৎসা মেলেনি নানার। বরং নির্দয় চিকিৎসক ডা. তারিকুল ইসলাম ও তাঁর সহকর্মীদের মারধরের শিকার হয়ে জেল খাটতে হয় কিশোর জিহাদকে। অবশেষে বাঁচেনি তাঁর নানাও। এক সপ্তাহ পর নানার লাশ নিয়ে গতকাল সোমবার ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি উজিরপুরে ফিরছে জিহাদ।
মারধর আর হাজতবাস কিছুরই এখন আর বিচার চায় না জিহাদ ও তাঁর স্বজনেরা। কেবল নানাকে হারিয়ে শোকাহত বরিশাল নগরের কাশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র জিহাদের।
জিহাদের মা জেছমিন আক্তার কান্নায় ভেঙে পরেন। তিনি বলেন, ‘তাঁর বাবা ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ইন্তেকাল করেছেন। ছেলে জিহাদ নানার কাছে আছে। কখন কীভাবে লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি উজিরপুরে ফিরবে তা এখনো জানি না।’
তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘বাবার চিকিৎসা শেবাচিমে হলো না। বরং শিশু সন্তানকে জেল খাটতেও হয়েছে। কিন্তু এরপরও তাঁরা বিচার চান না, বরং মিথ্যা মামলা থেকে ছেলের রেহাই চাই।’
জিহাদের এক খালা বলেন, ‘নানাকে হারিয়ে বিমর্ষ হয়ে পড়েছে জিহাদ। আক্ষেপের শেষ নেই তার।’
মৃত শাজাহান রাঢ়ী উজিরপুরের সাবেক একজন ইউপি সদস্য ছিলেন। তাঁর স্বজনেরা মনে করেন, শেবাচিম হাসপাতালে শাজাহান রাঢ়ী চিকিৎসা বঞ্চিত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ মার্চ শেবাচিম হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় ভর্তি করা হয় সাবেক ইউপি সদস্য শাজহানকে। সেখানে চিকিৎসা সেবাবঞ্চিত হওয়ায় নাতি জিহাদ ও এক জামাতা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে হাতাহাতি হয় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তারিকুল ইসলামের। ওই রাতে জিহাদকে হাসপাতালে আটকে নির্যাতন করে ডা. তারিকুল ও তাঁর আত্মীয়রা। পরে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয় কিশোর জিহাদকে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় মামলাও দায়ের করা হয়। ৪৮ ঘণ্টা পর জামিনে মুক্তি পায় জিহাদ।