জনস্বাস্থ্যের জন্য অনিরাপদ ও অস্বাস্থ্যকর খোলা ভোজ্যতেল বিক্রি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের পদত্যাগ দাবি করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক মানববন্ধনে পদত্যাগ দাবি করা হয়।
ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘বাজারে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা ড্রামে তেল বিক্রি বন্ধে সরকার ২০১৩ সালে আইন করেছে। এরপর এই আইনের বিধিমালা তৈরি হয়েছে। কিন্তু আইন এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। উল্টো উপদেষ্টা আইনকে অগ্রাহ্য করে বক্তব্য দিয়েছেন। এ জন্য তাঁর পদত্যাগ দাবি করছি।’
বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের আইন অনুযায়ী ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ ছাড়া ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশে ভোজ্যতেল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন, ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে ভোজ্যতেল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ বিধিমালা অনুযায়ী সব ভোজ্যতেলে নির্ধারিত মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ বাধ্যতামূলক। খোলা ড্রামের অনিরাপদ ভোজ্যতেল ব্যবহারের কারণে মানুষের মধ্যে নানাবিধ রোগব্যাধি বিশেষত অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
বক্তারা আরও বলেন, ‘সম্প্রতি বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি মাসখানেক হলো বাজার থেকে খোলা সয়াবিন তেল কিনে খাচ্ছেন এবং খোলা ও বোতলজাত সয়াবিনের মান একই। শুধু দামেই তফাত। বাণিজ্য উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
বক্তারা এক গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে বলেন, দেশের বাজারে ড্রামে বাজারজাতকৃত ৫৯ শতাংশ ভোজ্যতেলই ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ নয় এবং বাকি ৩৪ শতাংশ ভোজ্যতেলে সঠিক মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ নেই।
দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী বাণিজ্য উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে সয়াবিনের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে দস্তখত দিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানে চলে যাবেন। আপনাকে আমরা মন্ত্রণালয়ে দেখতে চাই না। এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে বিশৃঙ্খলা দূর করবেন। রমজানে বাজারে কোনো রকম বিশৃঙ্খলা দেখতে চাই না।’
মানববন্ধনে ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শওকত আলী খান, সদস্য আবুল কালাম, বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।