গোপালগঞ্জে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় গুলিতে যুবক নিহত হওয়ার তিন দিন পর সদর থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের বোন পারুল বেগম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। এতে সদ্য নির্বাচিত সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়াসহ ২৩ জনের নামে এবং ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে নিহত যুবক ওয়াছিকুরের বোন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।’
গত মঙ্গলবার রাতে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার জেরে সদর উপজেলার চন্দ্রদীঘলিয়ায় সদ্য নির্বাচিত সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়া ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী একই গ্রামের বি এম লিয়াকত আলীর সমর্থকদের মধ্যে চা-সিগারেট পানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় বি এম লিয়াকত আলীর সমর্থক ওয়াছিকুর নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এর প্রতিবাদে ঘটনার পরদিন গত বুধবার দুপুরে নিহত যুবকের লাশ নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গোপালগঞ্জের চেচানিয়াকান্দি এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে সোয়া এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করেন লিয়াকত আলীর সমর্থক ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। সড়কের ওপরে আগুন জ্বেলে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ফের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে সদর উপজেলার চন্দ্রদীঘলিয়া বাজারে মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। দেড় ঘণ্টা পরে বেলা ১টায় পরবর্তী আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা। আগামীকাল শনিবারের মধ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আগামী রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করা হবে বলে জানান বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ জানায়, নিহত ওয়াছিকুরের বোন পারুল বেগম বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সদ্য নির্বাচিত সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়াসহ ২৩ জনের নামে ও ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছে।