গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরের কাশিমপুরে গ্রামীণ ফ্যাব্রিকসে অগ্নিসংযোগে ১৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার থানায় কোম্পানির প্রশাসন শাখার (অ্যাডমিন) জিএম তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার রাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের আজ গাজীপুরের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইলে বিচারক এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) রিয়াজ উদ্দিন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সূত্রে জানা যায়, বুধবার বন্ধ ১৬টি কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বেক্সিমকোর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকেরা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ সন্ধ্যার দিকে শ্রমিকদের দুই পাশ থেকে ধাওয়া দেয়। তারা কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকেরা তেতুইবাড়ী এলাকার শেখ ফজিলাতুন্নেছা কেপিজে হাসপাতালের সামনে গ্রামীণ ফ্যাব্রিকসের গেট ভাঙচুর করেন। পরে তাঁরা ভেতরে ঢুকে গ্রামীণ ফ্যাব্রিকসের ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে পৌনে ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বেক্সিমকো শিল্প পার্কের আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একাংশ বুধবার সন্ধ্যার পর গ্রামীণ ফ্যাব্রিকসের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে অগ্নিসংযোগ করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভায়। এ সময় গ্রামীণ ফ্যাব্রিকস ভবনের নিচতলার সব পোশাক পুড়ে যায়, কিছু যন্ত্রপাতি ও মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেখানে কোনো কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি।’
জহিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ভবনটি ঘুরে দেখা গেছে, নিচতলা প্রায় ২০ ফুটের মতো। সেখানে একটি হলরুমসহ বেশ কিছু কক্ষ রয়েছে। এসব কক্ষে ফ্যাব্রিকসের কাপড় বাক্সবন্দী অবস্থায় ছিল। কিছু মেশিনারিজ ছিল। দুষ্কৃতকারীদের দেওয়া আগুনে সবকিছু পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনটির নিচতলায় সংস্কারমূলক কাজ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লোকজন এসব পরিদর্শন করেছেন।’
মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সুনির্দিষ্ট তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে কাশিমপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার রাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন শ্রমিকনেতা ও অন্যরা শ্রমিক। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’