নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর যাত্রাবাড়ির ছনটেকে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নারী সদস্যদের দিয়ে প্রতিষ্ঠিত পুরুষদের টার্গেট করে ব্ল্যাকমেল করে আসছিল। টার্গেট করা পুরুষদের নির্দিষ্ট ঠিকানায় ডেকে নেওয়া হতো। এরপর ডিবি পরিচয়ে নারীদের সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে টাকা আদায়ের জন্য ব্ল্যাকমেল ও নির্যাতন করা হতো।
গতকাল বুধবার এক ব্যক্তিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে টাকা আদায়ের সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন—চক্রের মূল হোতা ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে রানা (৩৪), মো. রবিউল ওরফে রবিউল হাসান (২৮), মোসা. জেসমিন বেগম ওরফে রিনা (৩০) ও পুতুল (২৮)।
এ সময় তাঁদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, একটি ওয়াকিটকি ও ছয়টি মোবাইল জব্দ করা হয়। ভুক্তভোগীদের নির্যাতনের কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি, লাঠি, প্লাস ও মাল্টিপ্লাগও জব্দ করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১০ এর সহকারী মিডিয়া কর্মকর্তা (এএসপি) এনায়েত কবির সোহেব।
এনায়েত কবির সোহেব জানান, প্রতারক চক্রের সদস্য জেসমিন ওরফে রিনা ভুক্তভোগীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়। সে রাজি হলে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী চক্রের ঠিক করে রাখা যাত্রাবাড়ি থানার ছনটেক এলাকার একটি বাসায় ভুক্তভোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চক্রের মূল হোতা রানা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে হাজির হয়। নিজেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করে ও চক্রের নারী সদস্য রিনার সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এই সকল ভিডিও দিয়ে মামলা করা ও বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে।
তিনি আরও জানান, প্রতারক চক্রটির বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে যায় র্যাব-১০। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও ভুয়া ডিবি পরিচয় দেওয়া প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা নির্যাতন ও টাকা আদায়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটি মামলার তথ্য পেয়েছে র্যাব। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।