ফরিদপুরে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে পেঁয়াজখেতে রক্তের দাগ দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে রাত ৯টার দিকে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। আজ রোববার (৫ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
নিহত কামাল মৃধা (৪২) জেলার নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের ভোজেরডাঙ্গী গ্রামের মৃত বিল্লাল মৃধার ছেলে। গত ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
এ নিয়ে জেলায় পরপর তিন দিনে খুন হওয়া তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে দুজনকে মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল।
আজ রোববার দুপুরে নিহত কামাল মৃধার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের শোকে আহাজারি করছেন বৃদ্ধ মা আছিয়া বেগম। দুই মেয়ে ও তিন ছেলের মধ্যে সবার ছোট কামাল মৃধা। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
আহাজারি করতে করতে আছিয়া বেগম বলেন, ‘পাঁচজন আছিল, একজন মানষি খাইয়্যা ফেলায়লো। আমি কী নিয়ে বাঁচবরে...। আমার ছাওয়ালের কোনো শত্রু ছিল না, কারোতা মাইর্যা খায় নাই, আমার ছেলেরে মাইর্যা ফেলায়লো কেডা। তাগো আমি বিচার চাই।’
নিহতের মেজ ভাই জামাল মৃধা বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর বিকেলে পার্শ্ববর্তী জামতলা বাজারে চা খেতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন কামাল। এরপর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। এরই মধ্যে গতকাল শনিবার বিকেলে স্থানীয় কয়েক কৃষক ভোজেরডাঙ্গী মাঠে একটি গ্রামীণ মেঠোপথে রক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখেন। ওই রক্তের দাগ ধরে পাশের একটি পেঁয়াজের খেতে গিয়ে মাটি খোঁড়া দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। পরে ওই মাটি সরিয়ে মরদেহের একটি হাত দেখেন তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
প্রতিবেশী হাবিবুর মোল্যা জানান, কামাল মৃধা পূর্বে অ্যাম্বুলেন্সের চালক ছিলেন। পরে তা ছেড়ে এসে কৃষিকাজ করতেন। তিনটি বিয়ে করেছিলেন। সব স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে। সর্বশেষ স্ত্রী চলে যাওয়ার পর তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান সাকিল বলেন, ফসলি জমির মাটিতে পুঁতে থাকা অবস্থায় এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের গলাকাটা ছিল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।