রাজধানীর আশুলিয়া থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে সাফি মোদ্দাসের খান জ্যোতিকে ৪ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান কারাগারে পাঠানোর এই নির্দেশ দেন।
বিকেলে জ্যোতিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার এসআই আবু তাহের মিয়া কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর তাকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। আগের দিন দিনগত রাত ৩ টার পর রাজধানীর গুলশান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ১১ সেপ্টেম্বর হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মো. রবিউল সানি বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলার এজাহারনামীয় ৪ নম্বর আসামি হলেন জ্যোতি।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইউজিসির সাবেক সচিব ড. ফেরদৌস জামান, সাবেক সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র ও ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।
এই মামলায় বলা হয়, বাদী গত ৪ আগস্ট আনুমানিক সকাল ১০ টায় ডেইরিগেট এর সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শান্তিপূর্ণভাবে যোগদান করেন। বেলা তিনটায় সন্ত্রাসী বাহিনী বাইপাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিতেভাবে গুলি ছোড়ে। আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনে অবস্থান করার কারণে বাইপাইল জামে মসজিদের ছাদের ওপর থেকে বাদীর পেটে স্নাইপার দিয়ে পুলিশ ও এর সন্ত্রাসী বাহিনী গুলি করে।
বাদী সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাহার পায়ে গুলি করলে তখন বাদী সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে যান। বাদীর পেটে স্নাইপারের একটি গুলি ডান পাশ দিয়ে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। বাদীর শরীরে পেটে ১টি ও ঊরুতে ২টি সহ মোট ৩টি গুলি লাগে। গত ৫ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত বাদী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। বাদী কিছুটা সুস্থ হয়ে মামলা দায়ের করেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান ও তাদের ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান পলাতক ছিলেন। গত ১ সেপ্টেম্বর আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দুই সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে জ্যোতি পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাভার রিফ্রাক্টরিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
জ্যোতির বিরুদ্ধে পুলিশের পদোন্নতি, বদলি, টেন্ডার বাণিজ্য থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশনে নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।