রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি তাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাপার চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা ঈদের আয় দিয়ে সারা বছর সংসার চালান। নিজের সব পুঁজি, স্বল্প সময়ের জন্য উচ্চ হারের সুদে টাকা নিয়ে ঈদের বাজারের জন্য মালামাল কেনাকাটা করেন। হঠাৎ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দোকান ভস্মীভূত হয়ে গেছে। দুর্যোগে যারা কষ্ট পাচ্ছেন, আমরা তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। পাশাপাশি সরকারের কাছে আবেদন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। দরকার হলে বিনা সুদে অথবা স্বল্প সুদে তাঁদের ঋণ দিতে হবে।’
ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সাহায্য দিতে বলেছি, দেখা যাবে এমন লোককে সাহায্য দেওয়া হচ্ছে, এখানে যার দোকানই নেই। যারা সরকারি দল করেন তাঁরাই সাহায্য ও ঋণ পাবেন। আবার যার ঋণ দরকার তিনি পাবেন না। অথবা ঋণ পেতে হলে অর্ধেক টাকা ঘুষ হিসেবে দিতে হবে। দুঃখের বিষয় এমন বাংলাদেশের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। ভুক্তভোগীরা দুঃখ-কষ্টে যাদের কাছে যাবে তাঁরা লুটপাট করবে।’
জনগণের নিরাপত্তা বিষয়ে সরকারের উদাসীনতাকে দায়ী করে জি এম কাদের বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের নিরাপত্তা ও জীবন মানের উন্নয়ন নিশ্চিত করা। সরকার দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের পরিবর্তে নিজেদের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত। পুলিশসহ সকল বাহিনীর লোক বাড়ছে, জনবল দ্বিগুণ করা হচ্ছে। তারপরও কেন এত আগুন লাগবে?’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘গেল বছর ২৪ হাজার অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারের মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হয় না। তদন্ত কমিটি গঠন হয়, কিন্তু কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কারও শাস্তি হয়েছে বলে আমরা জানি না। ৪ মার্চ চট্টগ্রাম রি-রোলিং মিলে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণে ৪ জন মারা গেছেন, সাইন্সল্যাব এলাকায় ৫ মার্চ ৫-৬ জন মারা গেল। আবার ৭ মার্চ সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে অনেক মানুষ মারা গেল। এগুলো যদি দুর্ঘটনা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে হাজার কোটি টাকার মালামাল ধ্বংস হয়ে গেল, এর দায়-দায়িত্ব কার? আগামীকাল যে এমন দুর্ঘটনা ঘটবে না তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবে? কোনো প্রাণহানি হয়নি, কিন্তু প্রাণহানির চেয়েও খারাপ অবস্থা হয়েছে।’