ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরে জিহাদ মাতুব্বর (১৩) নামের এক শিশুকে মারধর করে জ্যান্ত কবর দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তার পরিবারের অভিযোগ, মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলায় জিহাদকে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এ হত্যাচেষ্টা চালায়।
এ সময় জিহাদের সঙ্গে থাকা আরেক শিশু গোপনে পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। যেখানে নির্মমতার দৃশ্যটি দেখা যায়।
এ ঘটনার বিচারের দাবিতে আজ সোমবার ফরিদপুর শহরের একটি পত্রিকার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জিহাদের মা-বাবা। ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বড় মাধবপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মোস্তাক মাতুব্বরের চার ছেলেমেয়ের মধ্যে জিহাদ বড়। এ ঘটনায় মোস্তাক কোতোয়ালি থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন—হোগলাকান্দি গ্রামের হালিম মোল্যার ছেলে সিফাত মোল্যা (২৪), ইউসুফ শেখের দুই ছেলে মাসুম শেখ (২৩) ও মারুফ শেখ (২০), মোহন শেখের ছেলে শাকিল শেখ (১৯), বড় মাধবপুর গ্রামের ফরিদ মোল্যার ছেলে আরাফাত মোল্যা (২০) ও মৃগী গ্রামের সজল (২২)।
সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাক মাতুব্বর বলেন, ‘গত শনিবার রাতে আমার স্কুলপড়ুয়া ছেলে জিহাদ মাতুব্বর ওয়াজ শুনতে যাওয়ার সময় এলাকার বখাটে কয়েক কিশোর তাকে ধরে বেদম মারধর করে। পরে একটি কবরস্থানে নিয়ে কবর খুঁড়ে জ্যান্ত পুঁতে হত্যার চেষ্টা করে তারা। এ সময় ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা জিহাদকে দিয়ে আমার কাছে ফোন দিয়ে বলতে বলে, ‘‘তোর আব্বাকে মোবাইল ফোন করে বল, আমরা তোকে ধরে নিয়ে এসেছি। তোকে ছাড়িয়ে নিতে হলে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। তোর আব্বা টাকা না দিলে তোকে খুন করে কবর দিয়ে দেব।’ ’’
তিনি বলেন, ‘এ কথার বলার পরই ছেলেকে নির্মমভাবে মারধর করে এবং কবর খুঁড়ে জ্যান্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে লোকজন এগিয়ে এলে আমার ছেলে কোনোমতে পালিয়ে রক্ষা পায়।’
মোস্তাক মাতুব্বর আরও বলেন, ‘ওই রাতেই ছেলেকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে জিহাদ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। আমি অবিলম্বে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানাই।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কিশোর জিহাদ বলে, ‘আমাকে মারধরের পর একজন কোদাল এনে গর্ত করছিল। পরে জোর করে ওই গর্তের ভেতরে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তখন ভয়ে কাঁদতে থাকি। এ সময় আমার সঙ্গে থাকা এক শিশু দূর থেকে গোপনে ঘটনার ভিডিও করে। একপর্যায়ে আমার কান্নাকাটি ও চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পালিয়ে যায়।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদউজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। পুলিশ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।