ফরিদপুর প্রতিনিধি
আকাশে উড়ছে রং-বেরঙের ঘুড়ি। সেই ঘুড়ি দেখেতে হাজারো মানুষের ভিড় পদ্মার পাড়ে। পঙ্খিরাজ, চিল, ড্রাগন, হাজারী গোলাপ, ডিঙি নৌকা, জাতীয় পতাকার অবয়বে তৈরি ঘুড়ি। একযোগে সেই ঘুড়ি উড়াতে মেতে উঠেছে ফরিদপুরবাসী।
ফরিদপুর শহরতলির পদ্মার পাড়ের এলাকাটি ধলার মোড় হিসেবে পরিচিত। গত সাত বছর ধরে এই এলাকায় ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে আসছে ফরিদপুর সিটি অর্গানাইজেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সেই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার বিকেলে ‘চলো হারাই শৈশবে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে পেপারটেক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের সহযোগিতায় সপ্তমবারের মতো ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে সংগঠনটি।
বিকেল ৪টায় ঘুড়ি উড়িয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার। এ সময় ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান হাসান, ডিক্রিরচর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টুসহ অনেকে।
তামান্না আক্তার বলেন, ‘ঘুড়ি উৎসব ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। দেশের অন্য কোথাও এরকম আয়োজন হয় কি-না জানা নেই। আমি এখানে গত তিন বছর ধরে আসছি, আমার খুবই ভালো লাগে। প্রতি বছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করি। এবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি।’
‘শহুরে নাগরিক জীবনে আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শিখরের কথা নতুন প্রজন্ম প্রায় ভুলতেই বসেছে। এখানে এসে যেন শৈশবে হারিয়ে গেছি। ঘুড়ি উড়ানো আমাদের বাঙালির সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ঐতিহ্য। এমন আয়োজনে এসে আমাদের শিখরে চলে গেছি। এই তরুণ আয়োজকেরা আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে আমরা শৈশবে এভাবে ঘুড়ি ওড়াতাম।’ ঘুড়ি উৎসবে এসে এভাবে নিজের ভালো লাগা প্রকাশ করেন, ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক দেবাশীষ দাস।
ফরিদপুর সিটি অর্গানাইজেশনের রোকন উদ্দিন বলেন, ‘ঘুড়ি আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। সেই ঐতিহ্যকে ধারণ করে রাখতে প্রতি বছর এই আয়োজন করে থাকি। শৈশবের স্মৃতিতে ফিরে যেতে অনেকে রং-বেরঙের ঘুড়ি ওড়াচ্ছে। এখানে ফরিদপুরের বাইরে থেকেও অনেকে এসেছে।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘চর কেন্দ্রিক এই উৎসবকে স্থায়ী রূপ দিতে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। ঘুড়ি উৎসবের পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলাধুলা, বৈশাখী মেলাসহ বিনোদনমূলক উৎসবের ব্যবস্থা করা হবে।’