সাভার পৌর বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম আরিফকে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগ উঠেছে। হাতুড়ির আঘাতে তাঁর দুই পা ও বাঁ হাতের হাড় কয়েক টুকরা হয়ে গেছে। ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন এক সাংবাদিক।
গতকাল শনিবার রাতে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মাহতাব প্লাজার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আশরাফুল ইসলাম সাভার পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী ওবায়দুর রহমান অভির ভাগনে এবং পৌরসভার গেন্ডা এলাকার বাসিন্দা।
ভাগনের ওপর হামলার ঘটনায় ওবায়দুর রহমান ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম ও তাঁর লোকজনদের দায়ী করেছেন।
তবে খোরশেদ আলম অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওবায়দুর রহমান অভি ও খোরশেদ আলম সাভার পৌরসভার মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। প্রার্থিতা নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আশরাফুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকা দিয়ে রিকশায় করে যাচ্ছিলেন। এ সময় সাত থেকে আটজন লোক তাঁর রিকশার গতিরোধ করে। তাদের প্রত্যেকের হাতে হাতুড়ি ছিল। আচমকা তারা হাতুড়ি দিয়ে আশরাফুল ইসলামকে পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে আশরাফুল অচেতন হয়ে পড়লে তারা চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।’
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলের কাছাকাছি ছিলাম। তাই চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনার ভিডিও ধারণ করছিলাম। একপর্যায়ে দুই যুবক আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর করতে থাকে এবং আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। আমার ওপর হামলাকারীদের দুজনই হকার। তারা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করে।’
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আঘাতে আশরাফুলে দুই পা ও বাঁ হাত কয়েক টুকরো হয়ে গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
পুলিশ ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সাভার বাসস্ট্যান্ডের উভয় পাশের ফুটপাত ও মহাসড়কের ওপর ৩ হাজারেরও বেশি ভাসমান দোকান রয়েছে। এসব দোকান থেকে প্রতিদিন ৩ লাখ টাকারও বেশি চাঁদা আদায় হয়। এই চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হকাররা জানান, বিএনপির সাবেক এক নেতার লোক পরিচয়ে কতিপয় ব্যক্তি প্রতিদিন দোকানপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে থাকেন। তবে তাঁরা ওই নেতার নাম বলেননি।
সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া বলেন, হামলার ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।