পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশনে থাকা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনশনরত ৯ শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছে। তাঁদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। একজন চিকিৎসক ও দুজন নার্সকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিনে তিতুমীর কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজটির প্রধান ফটকের সামনের ফুটপাতে আটজন শিক্ষার্থী শামিয়ানা টানিয়ে শুয়ে আছেন। তাঁদের ঘিরে আছেন গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গত ২৯ জানুয়ারি বিকেল ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণাসহ সাত দফা দাবিতে তিতুমীর কলেজের ১২ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। আজ ভোরে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁদের সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁরা হলেন—বাংলা বিভাগের রানা, অর্থনীতি বিভাগের ইউসুফ এবং গণিত বিভাগের রায়হান। তবে তাঁরা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
অনশনরত ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ৩০ জানুয়ারি সকাল থেকে তিনি অনশনে আছেন। তাঁর শরীরের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া অনশনে রয়েছেন—ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, গণিত বিভাগের আমিনুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের মো. বেলাল হাসান, দুর্বার মামুন, এহতেসাম, হুমায়ুন কবির, মাফিজুল ইসলাম, রাব্বি ইসলাম এবং মাইনউদ্দিন।
আজ দুপুর দেড়টার দিকে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের চিকিৎসক রাসেল আহম্মেদ তাঁদের সবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, আটজন যারা এখনো অনশনে রয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের শরীর দুর্বল। দীর্ঘ সময় ধরে কিছু না খাওয়ায় তাঁরা ডিহাইড্রেশনে (পানিশূন্যতা) চলে গেছেন। তাঁদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁদের প্রেশার কম, বমি ভাব আসছে, কেউ উঠে দাঁড়াতে পারছেন না। এ রকম আরও চলতে থাকলে বিপদ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, বিকেলে পুনরায় কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা। আমরণ অনশনের পাশাপাশি তাঁরা এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বিকেল ৪টা থেকে বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি কর্মসূচি পালন করবেন তাঁরা। এই কর্মসূচির আওতায় ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সড়ক ও রেল পথ অবরোধ করা হবে। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ভোর ৬টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি শিথিল থাকবে।