ঢামেক প্রতিবেদক
সচিবালয়ের সামনে আনসার সদস্যদের হামলায় আহত হওয়া শাহিন হাওলাদার (৪৫) নামে এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পেশায় রেন্ট-এ কারের গাড়িচালক ছিলেন তিনি। আজ বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান তিনি। শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সানাউল হক তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত ২৫ আগস্ট রাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শাহিন হাওলাদার।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহত শাহিনের ছেলে বিশাল আহমেদ জানান, তাঁদের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার কচুবুনিয়া গ্রামে। বর্তমানে খিলগাঁও গোড়ান ৩০ নম্বর রোডে একটি বাসায় ভাড়া থকেন তাঁরা। তাঁর বাবা পেশায় রেন্ট-এ কারের গাড়িচালক ছিলেন।
বিশাল বলেন, ‘বন্ধুদের নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের প্রথম থেকেই রাজপথে ছিলাম আমরা। গত ২৫ আগস্ট সাধারণ আনসার সদস্যরা সচিবালয় ঘেরাও করে। রাতে যখন শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে উপস্থিত হয়, তখন আমাদের ওপর হামলা করে আনসাররা। তখন কয়েকজন বন্ধু মিলে সচিবালয়ের সামনে গিয়েছিলাম। রাত ৯টার দিকে সচিবালয়ের দুপাশে আনসার সদস্যরা অবস্থান নিলে মাঝখানে আটকা পড়ি। সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য বাবাকে ফোন দিই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবা ফোন পেয়ে সচিবালয়ের সামনে দিয়ে হেঁটে খুঁজছিলেন আমাদের। তখন আনসার সদস্যরা লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে বাবাকে। অনেকক্ষণ পর বাবার ফোনে কল করলে এক শিক্ষার্থী ফোন রিসিভ করে জানান, আনসার সদস্যরা বাবাকে আহত করেছে। সঙ্গে সঙ্গে বাবার কাছে গিয়ে তাকে আহত অবস্থায় ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি করি। সেখানে তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার হয়। রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে মারা যান।’
বিশালের বন্ধু রমজান হাওলাদার বলেন, ‘আমার বন্ধুর বাবা মূলত আমাদের সেদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে আনার জন্য গিয়েছিলেন। তবে সেখানে আমাদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এ সময় আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থী মনে করে তাঁকেও পিটিয়ে আহত করে। তাঁকে পেটানোর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওর মধ্যেও তাঁকে মারধর করতে দেখা গেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সানাউল হক জানান, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শাহিন হাওলাদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।