সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনার অন্যতম আসামি ফয়সাল ও মোস্তাফিজ হিন্দু পরিচয়ে ২৩ দিন খাগড়াছড়ির পাতাল কালীমন্দিরে লুকিয়ে ছিলেন। খবর পেয়ে সেখান থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান।
খাগড়াছড়ি থেকে দুই আসামিকে বহনকারীর হেলিকপ্টারটি আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলে অবতরণ করে। এ সময় ডিবিপ্রধান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এর আগে আজ দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত খাগড়াছড়ির পাতাল কালীমন্দির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ডিবিপ্রধান হারুন।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘খাগড়াছড়ির পাতাল কালীমন্দির এলাকায় ফয়সাল ও মোস্তাফিজ পলাশ রায় ও শিমুল রায় নাম ধারণ করে ২৩ দিন লুকিয়ে ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার খবর পাওয়া যায় খাগড়াছড়ি দুর্গম পাহাড়ে লুকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। ডিবির একটি টিম আগেই পাহাড়ে গিয়ে অভিযান শুরু করে। আজ আমরা গিয়ে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করি।’
ডিবিপ্রধান বলেন, ‘অজ্ঞান করার জন্য এমপি আনারের নাকে ক্লোরোফরম দেন ফয়সাল। আর মোস্তাফিজ এমপি আনারকে উলঙ্গ করে চেয়ারে বেঁধে রাখেন। কিলার শিমুল ভূঁইয়ার প্রধান দুই সহযোগী ছিলেন তাঁরা। এমপি আনারকে হত্যার পর ১৯ মে ফয়সাল ও মোস্তাফিজ দেশে ফেরেন।’
গত ১৯ মে রাতে আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে কথা বলেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। শাহীন তাঁদের ৩০ হাজার টাকা দেন। এরপর তাঁরা দুর্গম পাহাড়ের ওই মন্দিরে চলে যান। তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে আরও তথ্য বের করা হবে।
হারুন বলেন, ‘কলকাতায় এমপি আনারকে হত্যার মিশনে ছিলেন সাতজন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিমুল ভূঁইয়ার পরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তি হলেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা আমাদের এখন মূল কাজ। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আমরা আইনের আওতায় আনব।’
ফয়সাল ও মোস্তাফিজকে নিয়ে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে মিলিয়ে এমপি আনার হত্যা মামলায় মোট নয়জন গ্রেপ্তার হলেন বলেও জানান ডিবিপ্রধান।
এমপি আনার হত্যা মামলা নিয়ে ডিবির ওপর কোনো চাপ আছে কি না জানতে চাইলে হারুন বলেন, ‘না এখন পর্যন্ত কোনো চাপ নেই। যাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে, শুধু তাদের আইনের আওতায় আনছি। কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হবে না। আবার কোনো দোষী ব্যক্তিকে কেউ চাপ দিয়ে ছাড়াতে পারবে না।’