Ajker Patrika
হোম > সারা দেশ > ঢাকা

গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে ডাকাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে ডাকাতি

দীর্ঘদিন সিকিউরিটি গার্ডের চাকরির সুবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা ছিল আব্দুল কুদ্দুস ওরফে ডলার নাহিদের। সেই ধারণাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মিথ্যা পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযানের নামে বাড়িঘরে তল্লাশি করে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রী লুট করতেন তিনি। 

নাহিদ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতেন এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণার মাধ্যমে কৌশলে প্রশাসনের সহায়তা নিতেন। 

গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে নাহিদকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৪। সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভুয়া পরিচয়পত্র এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পোশাক পরিহিত ছবি জব্দ করা হয়। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ সদরের নারায়ণতলা গ্রামের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোকসেদ আলীর বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয়ে তল্লাশি, শ্লীলতাহানি, লুটের চেষ্টাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুয়া পরিচয়ে অভিযানের নামে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী আত্মসাৎ করেন আব্দুল কুদ্দুস ওরফে ডলার নাহিদ। সে সময় অভিযানের নামে বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট চালায় এবং তল্লাশির নামে বেআইনিভাবে গৃহবধূর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটায়। 

ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন। পরে সংশ্লিষ্ট থানা আসামিদের গ্রেপ্তারে র‍্যাবের সহায়তা চাইলে র‍্যাব মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। 

১৬ ফেব্রুয়ারি আসামি বিজন রায়কে মিরপুর মডেল থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিজনের মাধ্যমে র‍্যাব জানতে পারে সুনামগঞ্জের বর্ণিত এলাকার বিভিন্ন বাড়িসহ বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মিথ্যা পরিচয় দিয়ে লুটপাট এবং চাঁদাবাজির মূল পরিকল্পনাকারী আব্দুল কুদ্দুস ওরফে ডলার নাহিদ। ওই তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব ডলার নাহিদকে খুঁজতে নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং বিজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করে। 

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ডলার নাহিদ বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে মানুষের কাছে নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিতেন। 

তিনি প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পেরিয়েছেন এবং ২০০৯ সালে তাঁর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি নিজেকে ১৯৯৬ সালের এসএসসির ব্যাচ দাবি করে। বিভিন্ন কৌশলে এই ব্যাচের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গ্রুপে যুক্ত হয়ে নিজেকে গোয়েন্দা শাখা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় প্রতারণা করেছে। 

র‍্যাব জানায়, চার-পাঁচ মাস আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি গ্রুপের মাধ্যমে ডলার নাহিদের সঙ্গে বিজনের পরিচয় হয়। রাজধানীতে বিজনের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি বিজনের বাড়ি সুনামগঞ্জে হওয়ায় তিনি সুনামগঞ্জ যান। 

গ্রেপ্তার বিজন সুনামগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। পরে বিজনের সঙ্গে সুনামগঞ্জে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের কাছে কৌশলে নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয়  দেন ডলার নাহিদ। 

পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান, এখানে তিনি মাদকের একটি চালানের বিরুদ্ধে অভিযান করতে এসেছেন এবং অভিযানের জন্য তাঁদের সহায়তা চান। সে সময় তিনি, বিজন ও অন্য সহযোগীদের সমন্বয়ে সুনামগঞ্জের সদর নারায়ণতলা এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে লুটের জন্য পরিকল্পনা করে। প্রথমত, তাঁরা লুটের উদ্দেশ্যে ওই এলাকায় বিত্তশালী কয়েকটি বাড়ি টার্গেট করেন এবং তিন দিন ধরে টার্গেট বাড়ি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন এবং বিভিন্নভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘটনাস্থলে যান। পরে তিনি স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা জানিয়ে তাঁদের ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তাঁরা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোকসেদ আলী বাড়িসহ আশপাশের বাড়িতে তল্লাশি করেন এবং বাড়িতে থাকা লোকজনের শ্লীলতাহানি করেন। 

এ সময় তাঁরা তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী হাতিয়ে নেন। ওই ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে তাঁরা অভিযান শেষ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তাঁদের আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সংবাদ দেন। সে সময় তিনি নিজেকে গোয়েন্দা শাখার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মিথ্যা পরিচয় দিয়ে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যান।

৩৮ বছর বয়সে হত্যাসহ ৩২ মামলার আসামি কালু গ্রেপ্তার

বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম নিখোঁজের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে ছেলের অভিযোগ

ধর্ষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের বিক্ষোভ

ছোট্ট মানহার শরীরে গরম ছুরির অসংখ্য ছ্যাঁকা

আগুনে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি

ধর্ষণ-নিপীড়ন: হাইকোর্টের সামনে ছাত্রদলের মানববন্ধন

বনানীতে ৫ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়লেন পোশাকশ্রমিকেরা

রাজধানীতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে আগুন, ৪৫ মিনিট পর নিয়ন্ত্রণে

দুই তরুণীকে হেনস্তাকারী লালমাটিয়ার সেই রিংকু গ্রেপ্তার

শরীয়তপুরে মোটরসাইকেল-অটোরিকশা সংঘর্ষে কলেজছাত্র নিহত