হোম > সারা দেশ > খুলনা

হাঁটতে পারছেন না শয়ন, এক পায়ে ৫০ স্প্লিন্টার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ২১ বছর বয়সী শয়ন মণ্ডল চাকরির ফাঁকে ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে আন্দোলনে যোগ দেন। কয়েক দিনের মাথায় ২০ জুলাই বেলা দেড়টার দিকে মিছিলের প্রস্তুতিকালে পুলিশ গুলি চালালে তাঁর বাঁ পায়ে লাগে। পরদিন পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিজ বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশার কুঠিমালিয়াট গ্রামে ফিরে আসেন। এর পর থেকেই লুকিয়ে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন শয়ন। তাঁর পায়ের অধিকাংশ ক্ষত শুকিয়ে এলেও মাংসপেশির মধ্যে প্রায় ৫০টি স্প্লিন্টার রয়ে গেছে।

ঢুকে থাকা স্প্লিন্টার অপসারণ তো দূরের কথা, এখন ওষুধ কেনার টাকাই নেই শয়নের পরিবারের। চিকিৎসক জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার ও উন্নত চিকিৎসা করাতে পারলে শয়ন হাঁটতে পারবেন। শয়ন কুঠিমালিয়াট গ্রামের মৃত শওকত মণ্ডলের ছেলে।

গত শনিবার খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কথা হয় শয়নের সঙ্গে। তিনি জানান, এখনো তিনি পুলিশ-আতঙ্কে আছেন। নিজে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাটি জানাতে ভয় পাচ্ছেন। তাঁর বাঁ পায়ের পাতা থেকে হাঁটু পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০টি ছররা গুলির স্প্লিন্টার ঢুকে আছে। পায়ে ভর দিয়ে হাঁটতে পারছেন না। ডাক্তার তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেছেন। কিন্তু তাঁর ওষুধ কেনার টাকাও নেই। মায়ের কাছে যে সামান্য টাকা ছিল, তা দিয়ে এত দিন চিকিৎসা নিয়েছেন।

শয়ন জানান, একটি কেমিক্যাল কোম্পানির সরবরাহকারী ছিলেন তিনি। মনের টানেই ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। গত ২০ জুলাই অফিসে কাজ না থাকায় একটু আগেই ছাত্রদের আন্দোলনে শরিক হন। মিছিল শুরুর আগেই পুলিশ গুলি চালাতে শুরু করে। তাঁর থেকে একটু দূরে ১০-১২ বছরের এক মাদ্রাসাছাত্র গুলিতে মারা যায়। মুহূর্তের মধ্যে একটি গুলি এসে তাঁর বাঁ পায়ে লাগে। আন্দোলনকারী ছাত্ররা তাঁকে উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় রেখে যায়। পুলিশের চোখ আড়াল করে কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়ি ফেরাটা ছিল তাঁর জন্য অবর্ণনীয় কষ্টের। আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয় হলেও তাঁর মনে আতঙ্ক কাটেনি। পুলিশ-রাজনীতিবিদদের দেখলেই ভয় কাজ করে।

শয়নের সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর মা আসমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘তিন সন্তানের মধ্যে শয়ন সবার ছোট। স্বামীর মৃত্যুর পর ছোট ছেলে শয়নকে সাভারে চাকরির জন্য পাঠান। ছেলের উপার্জনেই তাঁর সংসার চলত। কিন্তু ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে খালি হাতে জীবন নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে সব হারিয়েছি। এখন আর আমার সঞ্চয় বলে কিছু নাই। ডাক্তার আবার ছেলেকে ভালো হাসপাতালে নিতে বলেছেন। ২৭ দিন পার হয়ে গেলেও ছেলে এখনো পায়ে ভর দিয়ে হাঁটতে পারছে না। ডাক্তার বলেছেন, গুলিগুলো বের করার পর পায়ে ভর দিতে হাঁটতে পারবে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবির হোসেন সোহাগ জানান, শয়নের বাঁ পায়ের মাংসপেশিতে কমপক্ষে ৫০টি স্প্লিন্টার ঢুকে আছে। এ জন্য তাঁর পায়ের ব্যথা যাচ্ছে না। কুষ্টিয়ায় অপারেশনের ব্যবস্থা আছে। সেখানে গেলে একটা ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। 

তিন সেতু-কালভার্টে ধস লাখো মানুষের দুর্ভোগ

রাজনৈতিক সরকার ছাড়া সংস্কার টেকসই হবে না: সিজিএস সংলাপে বক্তরা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা: প্রেস সচিব

সেপটিক ট্যাংক থেকে নিখোঁজ কৃষকের লাশ উদ্ধার

বাগেরহাটে অস্ত্র–গুলিসসহ ২ যুবক গ্রেপ্তার

নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখাচ্ছে খুবি শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ ‘সমৃদ্ধি’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে আজও কাঁদছেন ছাব্বিরের মা

২৬টি জুট মিল চালুর দাবিতে খুলনায় শ্রমিক সমাবেশ

দৌলতপুরে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু

পাউবোর পাইপ চুরি, গ্রেপ্তার ৩

সেকশন