Ajker Patrika
হোম > সারা দেশ > খুলনা

কুষ্টিয়ায় বন্ধ মিলে চাল সংগ্রহের বরাদ্দ, জানেন না মালিক

দেবাশীষ দত্ত, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় বন্ধ মিলে চাল সংগ্রহের বরাদ্দ, জানেন না মালিক
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার নিমতলা এলাকার শেখ রাইচ মিল। মিলের চাতালের ইট তুলে ছয় মাস ধরে বিক্রি হচ্ছে। এখন চলছে চাষাবাদের প্রস্তুতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ায় সরকারিভাবে চাল সংগ্রহ অভিযানে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মিরপুর ও দৌলতপুরসহ আরও কয়েকটি উপজেলায় অস্তিত্বহীন ও লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া মিলের নামে দেওয়া হয়েছে বরাদ্দ। আবার বরাদ্দের বিষয়ে জানে না অনেক মিল মালিক। সাধারণ মিল মালিকদের অভিযোগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খাদ্য বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা যোগসাজশে দিনের পর দিন চলছে এই অনিয়ম।

জেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম হচ্ছে লাইসেন্স থাকা সাপেক্ষে চালকল সচল এবং চাল সরবরাহ করার সক্ষমতা আছে তাদেরই দেওয়া হয় চালের বরাদ্দ। প্রতিবছর একটি বিশেষ কমিটির মাধ্যমে সেই সব চালকলের তালিকা তৈরি করা হয়। বরাদ্দ পাওয়ার পর চালকল মালিকেরা খাদ্য অফিসের সঙ্গে চুক্তি করে চাল সরবরাহ করে থাকে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, লোকসানে বোঝা মাথায় নিয়ে প্রায় ৫ বছর আগে বন্ধ হয়েছে গেছে জেলার মিরপুর উপজেলার নিমতলা এলাকার শেখ রাইস মিল। মিলের স্থাপনা ভেঙে সেখানে এখন চলছে চাষাবাদের প্রস্তুতি। সেই মিলের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১২ মেট্রিক টন চাল। আবার একই এলাকার বাসনা রাইস মিল বিক্রি হয়ে গেছে চার বছর আগে। এই মিলের নামেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সাড়ে ১২ মেট্রিক টন চাল। একই অবস্থা মিরপুরের বিআর রাইস মিলের। মালিক বজলুর রহমান জানান, নবায়ন না করায় বাতিল হয়ে গেছে তার মিলের লাইসেন্স। কিন্তু তার মিলের নামেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ১২ মেট্রিক টন চাল। অথচ এসব বরাদ্দের বিষয়ে কিছুই জানেন না দাবি তার।

বন্ধ শেখ রাইস মিলের মালিক মমিনুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মিলটা হাস্কিং মিল। এটা ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২০ সাল পর্যন্ত মিলটি চালু থাকলেও এরপর থেকে মিলটি বন্ধ আছে। মিলের জন্ম লগ্ন থেকে দুইবার আমরা সরকারের কাছে চাল দিতে পেরেছি। বাদবাকি সময় যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই দল সিন্ডিকেট চালায়। আমাদের লাইসেন্স আমরা চোখেও দেখি না। এখনো একই অবস্থা। আমাদের সই স্বাক্ষরও লাগে না ওরাই সই করে, ওরাই বরাদ্দ নেয়।

বাসনা রাইস মিলের বর্তমান মালিক রাশেদুজ্জামান বলেন, মিলটি চালাতে লোকসানের পড়তে হচ্ছে। তাই আমরা মিলটি বন্ধ করে দেই। আর ফুডের লাইসেন্সের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বা কোনো কাগজ হাতে পাইনি। মিলটির আগের মালিক আমিনুল ইসলাম জানান, মিলটি চালু থাকা অবস্থায় ২০ বছর আগে তিনি ২০ লাখ টাকা সিসি লোন উঠান। সেই লোন পরিশোধ করতে না পারায় সুদের টাকা অনেক বেড়ে যায়। যার ফলে তিনি ২ বছর আগে এই মিল বিক্রি করতে বাধ্য হন।’

কুষ্টিয়ায় বন্ধ হয়ে যাওয়া শেখ রাইচ মিলে দেওয়া হয়েছে চাল সংগ্রহের বরাদ্দ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুষ্টিয়ায় বন্ধ হয়ে যাওয়া শেখ রাইচ মিলে দেওয়া হয়েছে চাল সংগ্রহের বরাদ্দ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন মিল মালিক বলেন, শুধু শেখ, বাসনা বা বিআর রাইস মিলই নয়। মিরপুর এবং দৌলতপুর উপজেলায় চাল ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া চালকলের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অস্তিত্বহীন অথবা বন্ধ। তারা অভিযোগ করে বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খাদ্য বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা যোগসাজশে দিনের পর দিন চলছে এই অনিয়ম। সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদের সাহস করে না। তবে এর প্রতিকার চেয়েছেন তারা।

এমন অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে কুষ্টিয়া জেলা জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মিরপুরের বেশির ভাগ চালকলের অস্তিত্ব নেই। দৌলতপুরেও একই অবস্থা। রাজনৈতিক কারণে আমরা কিছু বলতে পারি নাই।’

 

কুষ্টিয়ায় বন্ধ হয়ে যাওয়া শেখ রাইচ মিলে দেওয়া হয়েছে চাল সংগ্রহের বরাদ্দ। ছবি: আজকের পত্রিকা

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মিরপুর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা জিন্নাত জাহান বলেন, ‘তিনজনের একটা কমিটি করে তালিকা তৈরি করে পাঠিয়েছিলাম। এ রকম হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। কারণ আমি মিলারদের বলেছি আমার ইন্সপেক্টর যদি কোনো মিলের তথ্য গোপন করে তাহলে আপনারা জেলা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত জানান, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল ওয়াজিউর রহমান বলেন, প্রত্যেকটা সংগ্রহ মৌসুমের শুরুতেই আমাদের একটা সার্ভে হয়। এই মৌসুমে যে মিলটা ভালো আছে পরের মৌসুমে সেই মিলটা ভালো নাও থাকতে পারে। কেউ বিক্রিও করে দিতে পারে। সেসব মিলের অস্তিত্ব আছে বা চালু আছে আমরা সেই মিলগুলোকে সার্ভেতে রেখেছি। নোটিশ বোর্ডে এবং মিটিং তালিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা আছে সুনির্দিষ্ট ভাবে যদি কোনো মিল সম্পর্কে কোনো অভিযোগ থাকে তবে, সঙ্গে সঙ্গে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং বরাদ্দ বাতিল করা হবে। আপনি যে মিলগুলোর বিষয়ে বললেন সেইগুলো বিষয়ে ইমিডিয়েট ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চলতি আমন মৌসুমে কুষ্টিয়ায় ৪৭ টাকা কেজি দরে ১৯ হাজার মেট্রিকটন চাল ক্রয় করবে খাদ্য বিভাগ। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সংগ্রহ কার্যক্রম।

ঘুষি মেরে পুলিশ সদস্যের নাক ফাটানোয় ছাত্রদল নেতা আটক

যবিপ্রবিতে বঙ্গবন্ধু একাডেমিক ভবনসহ ৫ স্থাপনার নতুন নামকরণ

রাতে স্বামীর জন্মদিন উদ্‌যাপন, সকালে নদীতে মিলল নববধূর লাশ

সালিসে হাতাহাতিতে আহত কৃষকের মৃত্যু, সাবেক সেনাসদস্য আটক

চার গরু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা ছিনতাই

কুষ্টিয়ায় গরুবোঝাই ট্রলির চাপায় শিশুর মৃত্যু

পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৫০

গাংনীতে বোমাসদৃশ ৩টি বস্তু উদ্ধার

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

খুলনায় কসাইয়ের চাপাতির আঘাতে আরেক কসাই নিহত