শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
সুন্দরবনে মনিরুজ্জামান বাচ্চুকে দলনেতা সাইফুল ইসলামের পাশ থেকেই ধরে নিয়ে বাঘ। গর্জন দিয়ে এক লাফে পেছনে থাকা সহযোগীকে ‘টার্গেট’ করলেও সাইফুলসহ অন্যরা কিছুই করতে পারেননি। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর সুন্দরবনের গভীর থেকে বনরক্ষীদের সহায়তায় মনিরুজ্জামানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওই মৌয়াল শ্যামনগর উপজেলার গাবুরার ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। তাঁর এমন মৃত্যুতে ছয় সদস্যের পরিবারটি অকূলপাথারে পড়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ছয় সদস্যের মৌয়াল দলের প্রধান ডুমুরিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, নৌকায় নামাজ আদায় করে তাঁরা মধুর খোঁজে আবার বনে প্রবেশ করেন। মৌয়ালরা সারিবদ্ধভাবে সুন্দরবনের মধ্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
সাইফুল আরও জানান, একটি মৌমাছির চাক দেখতে পেয়ে কাড় (মাছি তাড়ানোর জন্য আগুন দেওয়ার উপযোগী করে বাঁধা গাছের ডাল ও পাতা) বাঁধতে থাকেন তাঁরা। এ সময় গর্জন শুনে সামনের দিকে চোখ তুলতেই একটি বাঘকে লাফ দিতে দেখা যায়। এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে বাঘটি তাঁর পেছনে থাকা মনিরুজ্জামান বাচ্চুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার করেন। বাঘটি বাচ্চুর ঘাড়ে দাঁত বসিয়ে দিয়ে টানতে টানতে বনের
গভীরে নিয়ে যায়।
আজ শনিবার সকালে আরও কিছু গ্রামবাসী ও বনরক্ষীদের সহায়তায় সুন্দরবনের কাছিকাটা ও দারগাংয়ের মধ্যকার বনাঞ্চল থেকে সহযোগীর মৃতদেহ নিয়ে লোকালয়ে ফিরে আসেন সাইফুলরা।
বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে মধু কাটতে ছয়জনের দলটি সুন্দরবনে যায় প্রায় ১৮ দিন আগে। সুন্দরবনে গিয়ে বাঘের কবলে পড়ে জীবন হারানো মনিরুজ্জামানের পরিবারকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।