গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার অধিকাংশ দিনমজুর আজকের দিন তথা ১ মে বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাঁরা বলছেন, তাঁরা দিবস দিয়ে কী করবেন, না খাটলে যখন মুখে ভাত ওঠে না। কাজ করলে টাকা পান, সেই টাকা দিয়ে পরিবারের মুখে ভাত তুলে দেন। তাই গরিব মানুষের কোনো দিবস নেই।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কাঠমিস্ত্রি আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমাদের আবার কিসের দিবস? এক দিন না খাটলে মুখে ভাত ওঠে না। প্রতি মাসে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে ছেলেমেয়ের স্কুল, খাতা-কলম, ওষুধসহ বিভিন্ন খরচ আছে। গরিব মানুষের দিবস দিয়ে পেট চলে না।’
আব্দুল হান্নান আরও বলেন, ‘প্রতিদিন কাজে আসলে ৫০০-৬০০ টাকা আয় হয়। কিন্তু দিন শেষে কোনো টাকা জমা করতে পারি না। সবকিছুর দাম বেড়েছে। বাজার করতে গেলে টাকা শেষ হয়ে যায়।’
উপজেলার কাজীপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘মে দিবস আছে শুনেছি। কিন্তু ও তো বুঝি না। এই দিবসে কী হয়েছিল, তা-ও জানি না। আমরা রাজমিস্ত্রির কাজ করি, বিভিন্ন গ্রামে যেতে হয়। তীব্র তাপ বয়ে যাচ্ছে। তারপরও আমাদের প্রতিদিনই কাজ করতে হয়। এই গরমে কাজ করা যে কত কঠিন, তা বলে বোঝানো যাবে না।’
জামিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের মতো গরিব মানুষের আবার দিবস কিসের। না খাটলে যখন কেউ খেতে দেবে না। সবাই কাজে এসেছে, তাই আমিও এসেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিতম সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শ্রমিকেরা এখন অনেক সচেতন। তারা তাদের অধিকার আদায়ে সব সময় তৎপর। তারপরও কোনো অসংগতি দেখা গেলে উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। আর যদি কোথাও শিশুশ্রমের তথ্য পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, আজ বুধবার মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। প্রতিবছর ১ মে বিশ্বব্যাপী দিনটি উদ্যাপিত হয়। আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের দিবসটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠন রাজপথে মিছিল-শোভাযাত্রার মাধ্যমে পালন করে থাকে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে পয়লা মে জাতীয় ছুটির দিন।