আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১৭ দিন পর দেশে ফিরেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মালয়েশিয়াপ্রবাসী উজ্জ্বল হোসেনের (২৪) মরদেহ। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার জুগিন্দা গ্রামে জানাজা শেষে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে গত সোমবার সকালের দিকে মালয়েশিয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁর মরদেহ পৌঁছায়। পরে সব কার্যক্রম শেষে উজ্জ্বল হোসেনের পরিবারের কাছে মরদেহের কফিনটি হস্তান্তর করা হয়।
নিহত উজ্জ্বল হোসেন উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের জুগিন্দা গ্রামের শাহারুল ইসলামের ছেলে। তিনি গত ২০ ডিসেম্বর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানান স্বজনেরা।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে প্রায় দেড় বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান উজ্জ্বল হোসেন। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর ঠিকমতো কাজ না পাওয়ায় তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পরে একটি কোম্পানিতে কাজের সন্ধান পান। সেখানে অনেক কঠিন কাজ করা সত্ত্বেও ঠিকমতো বেতন না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার দেশে ফিরে আসার কথাও জানান উজ্জ্বল। কিন্তু আসতে পারেননি টাকার জন্য। তীব্র ক্ষোভ আর অভিমানে উজ্জ্বল আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেন। উজ্জ্বলের বন্ধুরা কাজ শেষে ঘরে ফিরে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন।
উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের দুলাল হোসেন বলেন, ‘আমরা একই কোম্পানিতে ছিলাম। সাত মাস হলো আমি বাড়ি চলে এসেছি। উজ্জ্বল ধারদেনা করে বিদেশে গিয়েছিল। সেখানে ঠিকমতো কাজ পেত না। ডিউটি কম ছিল, ওভার ডিউটিও ছিল না। আর যতটুকু কাজ করত সে অনুযায়ী টাকা পেত না কোম্পানি থেকে। কয়েকবার বাড়ি আসতে চেয়েছিল, কিন্তু কোম্পানি ঠিকমতো টাকা না দেওয়ায় আসতে পারেনি।’
দুলাল হোসেন আরও বলেন, ‘সে খুব কষ্টের মধ্যে বসবাস করছিল। ঋণের বোঝা, পরিবারের দায়িত্ব তার কাছে বড় বোঝা হয়ে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে হয়তো আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। উজ্জ্বলের বন্ধুরা কাজ শেষে ঘরে ফিরে উজ্জ্বলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। অবশেষে মালয়েশিয়ায় থাকা আত্মীয় ও বন্ধুদের সার্বিক সহযোগিতায় তার মরদেহ পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।’