কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
নড়াইলে সন্তানের কাছে নির্যাতনের শিকার ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা শাহাজাদী বেগম। নির্যাতনের পর তাঁর সন্তান তাঁকে ঘর থেকে বের করে দেয়। এরপর প্রচণ্ড শীতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চার মাস বয়সী নাতিকে নিয়ে বাড়ির গোয়ালঘরে গরু-ছাগলের সঙ্গে বসবাস করছিলেন তিনি। এভাবে টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শাহাজাদী বেগম তাঁর নিজের ঘরে ফিরেছেন। গত বুধবার নড়াইলের কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএন) উপজেলা কর্মকর্তাদের যৌথ অভিযানের পর তিনি নিজ গৃহে ফিরেছেন বলে জানা গেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শাহাজাদী বেগমের দুই ছেলে রফিকুল ইসলাম (৫০) ও শরিফুল ইসলাম (৪৫)। দুই ভাইয়ের মধ্যে পৈতৃক জমির ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ছেলে রফিকুলের সঙ্গে চার মাসের নাতিকে নিয়ে একটি ঘরে তিনি থাকতেন। রফিকুল স্থানীয় একটি মামলায় জড়িয়ে বাড়ির বাইরে আত্মগোপনে যান। এই সুযোগে তাঁর আরেক ছেলে শরিফুল গত ৭ জানুয়ারি মাসহ ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে বসতঘর থেকে বের করে তালা দিয়ে দেন। এরপর থেকে বৃদ্ধা শাহাজাদী বেগম শিশু নাতিসহ পুত্রবধূকে নিয়ে গোয়ালঘরে গরু-ছাগলের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন।
উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় সমালোচনা শুরু হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন ঘটনার খবর পেয়ে গোয়ালঘর থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুনরায় তাঁদের বসতঘরে তুলে দেন।
গত ১৯ জানুয়ারি এই অভিযান পরিচালনা করেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ইউএনও মো. আরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জহুরুল ইসলাম, কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ কনি মিয়া।
এ ঘটনায় কালিয়ার ইউএনও মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রচণ্ড শীতে একজন ৯০ বছরের বৃদ্ধা তাঁর শিশু নাতিকে নিয়ে গরু-ছাগলের সঙ্গে গোয়ালঘরে বসবাস করাটা নিতান্তই অমানবিক। তাই ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে বৃদ্ধা শাহাজাদীকে তাঁর নিজ বসতঘরে তুলে দিয়েছি।’