যশোরের শার্শায় নিখোঁজের আট দিন পর প্রেমিকের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে জেসমিন আক্তার পিংকি নামের এক কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে নিহতের ভাই আনিছুর রহমান বাদী হয়ে শার্শা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও শার্শা উপজেলার আহসান কবির অংকুর (২২), তাঁর বড় আহসান হাবিব তমাল, বাবা আকবর আলী চৌধুরী ও মা হোসনেয়ারা খাতুন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আকিকুল ইসলাম।
উপজেলার বুরুজবাগান এলাকা থেকে গতকাল শুক্রবার বিকেলে পিংকির লাশ উদ্ধার করেন র্যাবের সদস্যরা। আজ শনিবার সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কেরেলকাতা ইউনিয়নে জেসমিনের বাড়িতে দেখা যায়, সহপাঠী, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের ভিড়। সবার চোখমুখে শোক ও ক্ষোভের ছাপ।
ময়নাতদন্ত শেষে আজ শনিবার বিকেলে জেসমিনের লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে কলারোয়ার কাউরিয়া গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। জানাজা শেষে তাঁর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জেসমিনের মা মিনারা খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ের সহপাঠী আহসান কবির অংকুর ও তাঁর পরিবারের সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে তুলে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে মেয়েটিকে।’
যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের টেলিকমিউনিকেশন বিভাগীয় প্রধান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কোমলমতি মেধাবী শিক্ষার্থীকে যে সন্ত্রাসী চক্র হত্যা করেছে আমরা তাদের ফাঁসি চাই। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী অংকুরের বিরুদ্ধে কলেজ প্রশাসন সভায় সিদ্ধান্ত নেবে।’
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আকিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় চার জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। তিন জনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অংকুরের বড় ভাই আহসান হাবিব তমালকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
জেসমিনের ভাই আনিছুর রহমান মামলায় উল্লেখ করেন, গত চার বছর যাবৎ জেসমিন লেখাপড়ার জন্য যশোরে থাকত। বোন ও অংকুর একই সঙ্গে লেখাপড়ার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু সন্ত্রাসী অংকুর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে বাসায় তুলে নিয়ে সিমেন্টের জামানো পাথর দিয়ে থেতলিয়ে হত্যা করে বাড়ির সেফটি টেংকের মধ্যে বস্তা বন্দী করে রাখে ৷ র্যাবের সহযোগিতায় মরদেহ উদ্ধার করা হয় ৷ এই হত্যা সে কখনো একা করতে পারে না। এর পিছনে তার পরিবার জড়িত আছে। অংকুরসহ যারা জড়িত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই। হাত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।